আফগানিস্তান, নাইজার ও মালিতে চাঁদ দেখা যাওয়ায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের সাদ্রা ও শমেসপুর গ্রামের কিছু অংশের মানুষ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করছেন।
হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফ মাদ্রাসা মাঠে আজ রোববার সকালে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে ইমামতি করেন সাদ্রা দরবার শরিফের পীর মুফতি আল্লামা যাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানী।
এদিকে, গত বছরের মতো এবারও বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে আগাম ঈদ উদ্যাপনকারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তাদের মধ্যে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে সাদ্রা দরবারের বড় পীরজাদা পীর ড. মুফতি বাকী বিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী বলেন, ‘হানাফি, মালেকি ও হাম্বলি—এ তিন মাজহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে, পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তেও যদি চাঁদ দেখা যায়, আর সে সংবাদ যদি নির্ভরযোগ্য মাধ্যমে পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তেও পৌঁছায়, তাহলে পূর্ব প্রান্তের মুসলমানদের জন্য রোজা রাখা ফরজ এবং ঈদ করা ওয়াজিব। গতকাল শনিবার আফগানিস্তান, নাইজার ও মালিতে চাঁদ দেখা গেছে। ওই সংবাদ নির্ভরযোগ্য ভিত্তিতে প্রাপ্ত হয়ে আজ আমরা ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করছি। পাশাপাশি ঢাকার সদরঘাটের খানকা, আসকোনা এবং পটুয়াখালীর বদরপুর দরবার শরিফে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। চাঁদ দেখার তথ্য যথাসময়ে পৌঁছে দিতে না পারায় অনেক গ্রামে ঈদ উদ্যাপন হয়নি। তারা পরে ঈদ উদ্যাপন করবে।’
তবে, সাদ্রা দরবার শরিফের আরেক পীর মো. আরিফ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ঈদ করছি না। আমার চাচারা ঈদ উদ্যাপন করলেও আমাদের কাছে তা গ্রহণযোগ্য মনে হচ্ছে না। আমরা সোমবার ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করব।’
স্থানীয়রা জানান, সারা দেশে যখন পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়, তখন সাদ্রা ও শমেসপুর গ্রামে এক দিন আগে থেকে রোজা পালন শুরু হয়। আজ রোববার যখন এ দুটি গ্রামের একটি অংশে ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করা হচ্ছে, তারা পালন করেছে ২৯ রোজা। আর বাকি অংশ যখন সোমবার ঈদ উদ্যাপন করবে, তাদের পালন করা হবে ৩০ রোজা।
আরব দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে প্রতিবছর চাঁদপুরের তিনটি উপজেলার ৪০ গ্রামে ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করা হয়। সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা ৯৩ বছর ধরেই প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে সাদ্রাসহ ৪০টি গ্রামে ঈদ উদ্যাপন করে থাকে।
সাদ্রা ছাড়াও এক দিন আগে ঈদ উদ্যাপন করা গ্রামগুলো হলো—হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বড়কুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাসারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।
এ ছাড়া চাঁদপুরের পাশের নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও শরীয়তপুর জেলার কয়েকটি স্থানে বিশ্বমুফতি আল্লামা মাওলানা ইছহাক চৌধুরীর অনুসারীরা এক দিন আগে ঈদ উদ্যাপন করে।