আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটে ভোটগ্রহণ হবে’ নির্বাচনে কমিশনের এমন সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ ব্যাপারে আমাদের একটুও আগ্রহ নেই। কারণ আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, জাতির মূল সংকট হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি। নির্বাচনকালীন সময়ে কোন ধরনের সরকার থাকবে সেটিই হচ্ছে প্রধান সংকট। এ কারণেই আমাদের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে, স্বাধীনতার মূল যে চেতনা ছিল, সেই চেতনা থেকে দেশ বহু দূরে সরে এসেছে।
সোমবার, এপ্রিল ৩, ২০২৩, রাজধানীর লেডিস ক্লাবে ইফতারপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সম্মানে বিএনপির উদ্যোগে এই ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা অনেকগুলো রাজনৈতিক দল একমত হয়ে যে কথাগুলো বলছি তা হচ্ছে, যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না তাদের অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে, সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম। যুদ্ধের যে চেতনা আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল সবগুলোকে আজকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে। আমরা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছি অতীতে যেমন শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল এখন আবারও জনগণের সমস্ত অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হীন চক্রান্ত করছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এদেশের জনগণ কখনোই একনায়কতন্ত্র স্বৈরাচারকে মেনে নেয়নি। আজকে বাংলাদেশের মানুষ যেই অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই-সংগ্রাম শুরু করেছে। আমরা বিশ্বাস করি সেই সংগ্রামে সব রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি তাদের অধিকার আদায়ের জন্য শরিক হবেন এবং তাদের অধিকার আদায় করবেন।
মির্জা আলমগীর বলেন, আজকে সারা দেশে একটি শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা তৈরি হয়েছে। শুধু বিএনপির কথা বলছি না, সাধারণ কোনো দলের কথা বলছি না। আজকে সাধারণ মানুষও নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি ধোয়া তুলে জনগণকে বোকা বানিয়ে দুর্নীতির পাহাড় গড়ে তোলা হয়েছে। আজকের দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে বিদেশি পত্রিকাগুলো একইভাবে সে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে দেখেন মতিউর রহমান সাহেব এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পত্রিকা প্রথম আলোর সম্পাদক তার নামে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা দিয়েছে, পত্রিকাটির রিপোর্টার শামসুজ্জামান শামসকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। যদিও তিনি জামিন পেয়েছেন। আপনাদের মনে আছে আমার দেশ-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে অত্যাচার-নির্যাতন করে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেছে। নওগাঁর একজন মহিলা তিনি সরকারি কর্মচারী কী কারণে তাকে র্যাব তুলে নিয়ে গেল এখন পর্যন্ত জানা যায়নি এবং তুলে নিয়ে যাওয়ার ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সে নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করল, তাকে মেরে ফেলা হলো।
ইফতারের পূর্বে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন ওলামা দলের মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক। বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় আরও অংশগ্রহণ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, শাহজাহান ওমর, নিতাই রায় চৌধুরী, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আহমেদ আযম খান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, মো. আবদুস সালাম, মিজানুর রহমান মিনু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, শায়রুল কবির খান ও শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।
এ ছাড়া ইফতারে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, মজিবুল হক চুন্নু এমপি, কাজী ফিরোজ রশিদ এমপি ও ফখরুল ইমাম এমপি।
অন্যান্য রাজনীতিবিদদের মধ্যে এলডিপির কর্নেল অলি আহমদ, জেএসডির আ স ম আব্দুর রব, মিসেস তানিয়া রব, ড. রেদোয়ান আহমেদ, গণফোরামের মোস্তফা মোহসীন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের অধ্যাপক নূরুল আমিন বেপারী, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, এস এম শাহাদাত হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ ভাসানী) আজহারুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির (জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, বাংলাদেশ এলডিপির আব্দুল গণি, শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তের মহিউদ্দিন ইকরাম, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুর রকিব, এনডিপির কারি আবু তাহের, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকী, গণঅধিকার পরিষদের মুহাম্মদ রাশেদ খান, গণদলের এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ ন্যাপের এম এন শাওন সাদেকী, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির গরিবে নেওয়াজ, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নূরুল ইসলাম ও মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি কুমার মন্ডল প্রমুখ।