সোলায়মান হাসান, নারায়ণগঞ্জ: সোনারগাঁয়ে ইউনিয়ন যুবদলের রাজনৈতিক সমাবেশে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ার জেরে ছাত্রদল নেতার উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে নোয়াগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির ৪নং ওয়ার্ড সভাপতি আনিস আহমেদ এর বিরুদ্ধে।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের লাদুরচর টিটিরবাড়ি স্ট্যান্ডে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক বায়েজিদ ভূঁইয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক বায়েজিদ ভূঁইয়া লাদুরচর গ্রামের নুরুল হক ভূঁইয়ার ছেলে। আহত বায়েজিদ ভূঁইয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসার জন্য সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার বিকেলে উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের লাদুরচর টিটিরবাড়ি স্ট্যান্ডে ইউনিয়ন বিএনপির ৪নং ওয়ার্ডের সভাপতি আনিস আহমেদ এর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী বাহিনী লোহার রড ও হকিস্টিক দিয়ে তার ওপর হামলা চালায়।
এসময় ছাত্রদল নেতা বায়েজিদ ভূঁইয়াকে জখম করে ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে বক্তৃতা দেওয়ার জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানান স্থানীয়রা। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, হামলাকারী আনিস আহমেদ নব্য বিএনপি নেতা। স্বৈরাচার হাসিনা সরকার এর আমলে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলো। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা আনিস কে তার সন্ত্রাসী বাহিনীর কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহার করতো। আওয়ামীলীগ নেতা দর্পন, জহিরুল মেম্বার, শফিকুল মাস্টার বাহিনীর সকল সন্ত্রাসী কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রক ছিলেন আনিস আহমেদ।
সন্ত্রাসী হামলার ৭ দিন পাড় হলেও আনিসুর রহমান বিরুদ্ধে দলিও সাংগঠনিক ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয়নি এবিষয়ে নোয়াগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুবক্কর বলেন, এবিষয়ে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি কমিটির সিনিয়ার নেতা কর্মীদের সাথে আলোচনা হয়েছে, আনিসুর রহমান তার অপরাধের স্বীকার করেছেন। উপজেলা কমিটির সিদ্ধান্ত না দিলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছি না।
এ বিষয়ে তথ্য জানার জন্য নোয়াগাঁ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমানকে একাধিক বার মোবাইলে কল করেও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে হামলা আহত বায়েজীদ ভুইয়া বলেন, এখন পর্যন্ত আমার শারীরিক অবস্থা ভালোনা পরিপূর্ণ সুস্থ হয়নি। আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত দলীয় সাংগঠনিক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি, এ বিষয়টা নিয়ে আমি হতাশ। আমার রাজনৈতিক জীবনে অনুপ্রেরণা, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শকে অনুসরণ করে অনুপ্রবেশকারী ও হাইব্রিড নেতাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়াতে আমার কাল হয়েছে।
রাতের আঁধারে অর্থের বিনিময়ে পদ পদবী নিয়ে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসরদের সাথে নিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের পরিকল্পনায় আনিসুর রহমান এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
৪নং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটির সভাপতি হাইব্রিড নেতা আনিসুর রহমান, ও সাধারণ সম্পাদক নাঈম কাতার প্রবাসী, কিভাবে ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দলীয় তালিকায় কিভাবে তাদের নাম প্রস্তাব করলো আমার বোধগম্য নয়।
তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে, আমি তার সাথে আপোষ করবো না। আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া থেকে একই শিক্ষা পেয়েছি, নেত্রী কখনো কারো সাথে আপোষ করেনি, আমিও হাইব্রিড নেতাদের সাথে আপোষ করবো না।
এবিষয়ে সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজারুল ইসলাম মান্নান বলেন,
বিষয়টি জানতে পেরে আমার ছেলে খাইরুল ইসলাম সজীবকে, হাসপাতালে খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলাম। উপজেলা বিএনপির কমিটির লোকজনের সাথে বিষয়টি আলোচনা হয়েছে, খুব শীঘ্রই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।