তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস চলছে মাত্র এক কর্মকর্তায় দাপ্তরিক কার্যক্রম। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সাত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ১৪টি পদের ১১টি পদই শূন্য। দীর্ঘদিন ধরে চরম জনবল সংকটে ভোগছে গুরুত্বপূর্ণ এই দপ্তরটি। ফলে স্বাভাবিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট অফিসের বরাতের সুত্রে জানা গেছে, বড়লেখায় ১৫১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়াও অর্ধশত কিন্ডার গার্টেন, ১৫টি এবতেদায়ী মাদ্রাসা ও ৭০টি এনজিও পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। লোকবল সংকটের কারণে নিয়মিতভাবে এসব বিদ্যালয় পরিদর্শন না করায় চরম ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমে। আর সঠিক তদারকির অভাবে গুড়াতেই দুর্বল হয়ে উঠছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। যার বিরূপ প্রভাব পড়বে তাদের পরবর্তী স্তরের শিক্ষা জীবনে।
একজন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, ৭জন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, একজন উচ্চমান সহকারী, তিনজন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, একজন হিসাব সহকারী এবং একজন অফিস সহায়কসহ সর্বমোট ১৪টি পদ রয়েছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে। কিন্তু এর বিপরীতে জনবল কাঠামো যেন শুধুই কাগজে-কলমে। বছরের পর বছর মাত্র একজন সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, একজন হিসাব সহকারী ও একজন অফিস সহায়কই সরকারের তৃণমূলের গুরুত্বপুর্ণ এই দপ্তরের ভরসা। ৫ বছর ধরে পদশূন্য রয়েছে ৬টি সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার। প্রায় দেড়বছর ধরে একমাত্র সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মীর আব্দুল্লাহ আল মামুন অতিরিক্ত হিসেবে পালন করছেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসারের দায়িত্ব। তাকে বেশীরভাগ সময় অফিশিয়াল কাজকর্মে ব্যস্ত থাকায় বিদ্যালয় পরিদর্শন, ক্লাষ্টার, সাব ক্লাষ্টার কার্যক্রম ও সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র যথাসময়ে প্রস্তুত ও জেলায় প্রেরণ দুরুহ হয়ে উঠে। এতে অনেক শিক্ষক/শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ফলে এই উপজেলার প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে অনেকটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ভাঙ্গা পায়ে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মীর আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, শিক্ষা অফিসারসহ ৮ জন কর্মকর্তার দাপ্তরিক কাজ তাকে একাই সামাল দিতে প্রতিদিন ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৮-২০ ঘন্টা পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। সম্প্রতি ৭১ জন নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকের যোগদান, পে-ফিক্সেশন, চাকুরী বহি খোলাসহ যাবতীয় কার্যক্রম অত্যন্ত দ্রুততার সাথে তিনি সম্পন্ন করেছেন। এরপরও জনবল সংকটের কারণে শিক্ষা অফিসের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। এ ব্যাপরে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে বারবার অবহিত করেছেন।
উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জনবল সংকটের বিষয়টি তিনি জেলার মাসিক সভায় উপস্থাপন করেছেন।
মৌলভীবাজারের জেলা শিক্ষা অফিসার (প্রাথমিক) শামছুর রহমান বলেন, বড়লেখা শিক্ষা অফিসে জনবল নেই বললেই চলে। তিনি এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিয়মিতভাবে অবহিত করে যাচ্ছেন। গত মঙ্গলবারও তিনি দ্রুত শূন্যপদ পুরণের ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছেন। কতৃপক্ষ নিশ্চয়ই এর আশু ব্যবস্থা গ্ৰহনের উদ্যেগ নিবেন।