বগুড়া ১ সারিয়াকান্দী-সোনাতলা আসনে উপ নির্বাচন অনেকটা ভোটার শূন্যভাবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দুপুর একটা পর্যন্ত বেশিরভাগ কেন্দ্রে গড়ে ১০ শতাংশ ভোট পড়েছে। তবে ভয়াবহ বন্যার কারণে বেশ কিছু কেন্দ্রে পর্যবেক্ষকরা পৌঁছাতে পারেনি।
এদিকে খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেছেন, অনেক কেন্দ্রে নৌকা মার্কার লোকজন জাল ভোট দিচ্ছেন। তিনি বলেন বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হলে তিনি তাকে বলেছেন, সব কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেট দেয়া সম্ভব নয়। অভিযোগের বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।
করোনায় মানুষ দিশেহারা। প্রতিদিন আক্রান্ত এবং মৃত্যু বাড়ছে।
সেই সাথে যোগ হয়েছে বন্যা। উত্তরের প্রায় সব নদনদীগুলোর পানি এখন বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। চরাঞ্চলগুলো বেশ কিছুদিন আগেই পানির নিচে ডুবে আছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে ভোটাররা কেন্দ্র বিমুখ হয়ে গেছেন। অপর দিকে বিএনপি নির্বাচন পেছানোর দাবীতে মাঠ ছেড়েছেন বেশ কয়েক দিন আগে। তারপরেই অনেকটা নিরুত্তাপ হয়ে যায় নির্বাচন।
দুপুর একটা পর্যন্ত সারিয়াকান্দীর ফুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ হাজর ৫১২ ভোটারের মধ্যে ভোট পরেছে মাত্র ২২৫ টি। ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার শাহাদত হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন ভোট শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে।
সারিয়াকান্দী সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মিলন হোসেন বলেন, দুপুর একটা পর্যন্ত তার কেন্দ্রে ১৩ শতাংশ ভোট পড়েছে।
সোনাতলা- সারিয়াকান্দি আসনের বেশির এলাকা এখন পানির নিচে। এসব এলাকার ভোটাররা জীবনের ঝুকি নিয়ে বন্যার সাথে পাল্লা লড়ছে। এই পরিস্থিতিতে তারা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবে না।
তাছাড়া সারিয়াকান্দীর প্রত্যন্ত চরগুলোতে যে সব কেন্দ্র আছে সেগুলোও পানির নিচে। বিকল্প কেন্দ্রগুলোতে যেতেও বাঁধা হয়ে আছে বন্যা। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বগুড়া সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মো: সিরাজ, বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোশারফ হোসেনসহ স্থানীয় বিএনপি বরাবরেই এই নির্বাচন পেছানোর দাবী জানিয়ে আসছেন। কিন্তু তাদের সেই দাবীগুলোকে আমলে নেই নি নির্বাচন কমিশন। কমিশন নির্বাচনে অটল। ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী নির্বাচন হচ্ছে ।
এদিকে বগুড়া-১ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকির নির্বাচন পেছানোর দাবীতে মাঠ ছেড়েছেন আগেই। তিনি বলেন, যে নির্বাচনের মানুষের আগ্রহ নেই সেই নির্বাচন বিএনপি করবে না। আগে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা তারপর ভোট। তিনি আরো বলেন, আমরা জোরালো ভাবে নির্বাচন পেছানোর দাবী করেছি এবং সেই দাবী না মেনে তামাশার নির্বাচন করছে সরকার। কেন্দ্রে সাধারণ ভোটার নেই। আওয় লীগ তাদের কর্মীদের দিয়ে ইচ্ছেমত ভোট করাচ্ছে। এই নির্বাচন জনগণ প্রত্যাক্ষান করেছে।
দুই উপজেলায় মোট ১২৩ টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন চলছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এ
ছাড়াও মোবাইল ফোর্স টিম ২১টি, স্ট্রাইকিং ফোর্স টিম ১১টি, রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স একটি। এছাড়াও র্যাবের ১০টি টহল টিম ও ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।
উল্লেখ্য তিন লাখ ৩০ হাজার ৮৯৩ ভোটারের বগুড়া-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন সাহাদারা মান্নান শিল্পী (নৌকা), এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকির (ধানের শীষ), মোকছেদুল আলম (লাঙল), মো. রনি (বাঘ), নজরুল ইসলাম (বটগাছ) ও ইয়াসির রহমতুল্লাহ ইন্তাজ (স্বতন্ত্র ট্রাক)। উৎসঃ মানবজমিন