প্রথমে নারীদের নাম ব্যবহার করে ভুয়া আইডি খুলতেন। এরপর সুন্দর সুন্দর ছবি দিয়ে আকৃষ্ট করতেন পুরুষদের। কথাবার্তা বলে তৈরি করতেন বন্ধুত্ব। দেখা করার নামে ফাঁদ পেতে ফোনে ডেকে এনে মানুষকে জিম্মি করে মারধরের পর সর্বস্ব ছিনিয়ে নিতেন তারা।
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শনিবার রাতে (২৯ মে) অভিযান চালিয়ে পুলিশ এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন ইমাম হোসেন (২৪), মশিউর রহমান (২১) ও ফখরুল ইসলাম((২৫)। এরাসহ জড়িত পাঁচ জনের একটি চক্র স্থানীয় ছাত্রলীগের কমী হিসাবে পরিচিত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম রবিবার (৩০ মে) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘গ্রেফতার যুবকেরা শুক্রবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় সোনাগাজী-কাশ্মীর বাজার সড়কের পৌরসভার চরগনেশ এলাকায় নারীকণ্ঠে মো. আইয়ুব খান (২৮) নামে এক এনজিওকমীর মোবাইল ফোনে কল দেয়। ফোন পেয়ে আইয়ুব আসামিদের নির্দেশিত জায়গায় গেলে ইমাম, মশিউর, ফখরুল, ছিদ্দিকসহ পাঁচ থেকে ছয় জন তাকে আটক করে বেদম মারপিট করে। তার কাছ থেকে নগদ টাকা, মুঠোফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। ঘটনাটি জানার পর পুলিশ তাদের গ্রেফতারে নামে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ওসি সাজেদুল ইসলাম আরও জানান, আসামিরা ফেসবুকে নারীর ছবি ব্যবহার করে বিভিন্ন জনকে বন্ধু হওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। এরপর তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে মোবাইল ফোন নম্বর নেন। ফোনে নারীকণ্ঠে কথা বলে সোনাগাজীতে ডেকে এনে জিম্মি করে টাকা, ফোন ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে তাড়িয়ে দেন।
ভুক্তভোগী আইয়ুব খান জানান, তিনি সাজেদা ফাউন্ডেশন নামের একটি এনজিওর চট্টগ্রামের ভুজপুর শাখার অফিস সহকারী। তার বাড়ি ভুজপুর থানার জজখোলা মহানগর এলাকায়। তিনি অভিযোগ করেন, আটকৃতরা জিম্মি করে তার কাছ থেকে ১২ হাজার ৪০০ টাকা, একটি মোবাইল ফোনসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিস ছিনিয়ে নিয়েছে। পরে তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে ফেলে চলে যায় তারা। বর্তমানে তিনি ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনায় ওই রাতে আইয়ুব খান বাদী হয়ে সোনাগাজীর স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মী ইমাম হোসেন, মশিউর রহমান, ফখরুল ইসলাম, আবু বক্কর ছিদ্দিকসহ অজ্ঞতানামা কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
এ বিষয়ে সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল মোতালেব চৌধুরী বলেন, ‘গ্রেফতার তিন জন ছাত্রলীগের কর্মী। তবে তাদের কোনও পদ-পদবি নেই।’