November 23, 2024, 7:25 am
সর্বশেষ:
Shael Oswal’s Romantic Anthem “Rabba Kare” Mesmerizes Audiences Worldwide কয়রায় খাস জমিতে ভবন নির্মাণ, ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন ১৭ বছর বাড়িতে ঘুমাতে পারিনি: আমির খসরু বান্দরবানে পর্যটকদের বিনোদনে চালু হচ্ছে ছাদখোলা বাস বান্দরবানে দু:স্থ মহিলাদের মধ্যে সেলাই মেশিন ও ভাতা প্রদান শহীদ আব্দুল্লাহর পরিবারকে আর্থিক সহযোগীতা করলেন যশোরের পুলিশ সুপার প্রথমবারের মতো বান্দরবানে শুরু হতে যাচ্ছে মাসব্যাপী ক্রীড়া মেলা কুয়াকাটায় ২৭ ঘন্টা পরে মিললো পাবলিক টয়লেট থেকে এক ব্যক্তির লাশ এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট ইস্যুঃ গন্ডামারা ইউনিয়নের ঐক্যবদ্ধ ছাত্র জনতার মানববন্ধন আলফাডাঙ্গা বাজার বনিক সমিতির সভাপতি নজির মিয়ার মৃত্যুতে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল

ফেসবুকে একটার পর একটা ভিডিও, কেন দেখছেন?

  • Last update: Wednesday, November 11, 2020

আড্ডায় বসে আছেন। স্মার্টফোন যথারীতি মুঠোয় ধরা। একটু পর পর নিশপিশ করছে বুড়ো আঙুলটা। পেছনে তর্জনী ছোঁয়াতেই জ্বলে উঠলো স্ক্রিন। অবচেতনেই স্ক্রল করতে শুরু করেছেন ফেসবুক। চালু হলো একটা ভিডিও। সেটি শেষ হতেই শুরু হলো আরেকটা। চোখ আটকে গেলো তাতেও। উগান্ডায় ঘটে যাওয়া কোনও মজার কাণ্ডের পর চালু হলো ভিয়েতনামের স্থানীয় কোনও রেসিপি। তারপর দেশি কোনও সিনেমার ফুটেজ কেটে বানানো কোলাজ। একটার পর একটা আসছেই। আড্ডায় আছেন নাকি অফিসের মিটিংয়ে, সেটাও ভুলে গেলেন। বেশ খানিকটা সময় পর যখন ফোনটা অবশেষে লক করলেন, ততক্ষণে জীবন থেকে হারিয়ে গেলো গুরুত্বপূর্ণ অনেক মিনিট।

বাসার অন্য অনেক কাজ জমে থাকলেও দেখা গেলো অনেকের পছন্দের ভিডিও হলো রেসিপি দেখা। রঙিন রঙিন পদের রান্না (সম্পাদনা করে রঙিন করা) আর জমপেশ উপস্থাপনা ভালো না লেগে উপায় নেই। ওই পেজে আরও কী রান্নার ভিডিও আছে একের পর এক দেখলেন সেগুলোও। ঘণ্টা পার হওয়ার পর বুঝতেও পারলেন না যে এতক্ষণ যে রেসিপিগুলো দেখলেন তার একটিও ঠিকঠাক মনে নেই। প্রশ্ন হলো, লাগাতার ভিডিও দেখে যাচ্ছেন কেন?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা নতুন যুগের আসক্তি। এ থেকে বের হয়ে আসাটা সত্যিই কঠিন!

গবেষণা বলছে, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো ইদানীং মেধাবীদের ভাড়া করছে। যেন তার অ্যাপ বা পেজটা আপনাকে আসক্ত করে তুলতে পারে। ফেসবুকের অ্যালগরিদমটাও সেভাবেই সাজানো। ২০২০ সালের শুরু থেকে কোভিডের কারণে ঘরে সময় কাটাতে গিয়েও আবার অনেকের ভিডিও আসক্তি চরমে পৌঁছেছে।

যারা এ ‘রোগে’ আসক্ত, তাদের কিন্তু প্রায়ই সারাক্ষণ স্মার্টফোনে তাকিয়ে থাকা নিয়ে গঞ্জনা শুনতে হচ্ছে। আর অন্য আসক্তদের মতো সেই ব্যক্তিও কিন্তু তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বলেন, ‘কখন সারাক্ষণ ফেসবুক ঘাঁটি!’

মনোরোগ বিশ্লেষকরা বলছেন, আপনি যে এক ঘণ্টায় ১০ম বারের মতো নিজের ফেসবুক নিউজফিড স্ক্রল করছেন সেটা কেউ দেখে ফেলার আগে সূক্ষ্ম উপায়ে লুকিয়ে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখে নেওয়ার কৌশলটিও আয়ত্ত করে নিয়েছেন। আর তা সম্ভব হয়েছে আসক্তির কারণেই।

‘ফেসবুক ওয়াচ’ এখনও আগামী দিনের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল ভিডিও প্ল‌্যাটফর্ম কিংবা ইউটিউবের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠেনি। তবে ব্যবহার এবং মানুষের আগ্রহ ক্রমে বাড়তে থাকায় এর সম্ভাবনা প্রবল। ‘ফেসবুক ওয়াচ’-এর বেশ কিছু শো যে পরিমাণ দর্শক পাচ্ছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারীকে একসঙ্গে করতে পারছে তাতে এ সম্ভাবনা সত্য হতে বেশি দিন নেই।

কয়েকটি ওয়েবসাইটের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন গড়ে প্রতিদিন ফেসবুকে ৪০০ কোটি ভিডিও ভিউ (একই ভিডিও একাধিক ভিউ হিসেবে) হচ্ছে। এতে ৫০ কোটি ব্যবহারকারীর প্রতিদিন ১০ কোটি ঘণ্টা সময় যাচ্ছে! এদের মধ্যে আবার ৮৫ ভাগই ভিডিও দেখছে অডিও ছাড়া। অর্থাৎ বিশেষ কোনও তথ্য তারা পাচ্ছে না, স্রেফ ভিডিওটাই দেখছে।

এদিকে বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইন্টারনেট ব্রাউজার মজিলার সাবেক কর্মকর্তা আজা রাসকিন বলেন, ‘এটা অনেকটা স্বভাবগত নেশাজাতীয় বস্তুর মতো এবং সেটা পুরো ইন্টারফেসে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটি ফোনের স্ক্রিনের পেছনে কয়েক হাজার ইঞ্জিনিয়ারের অবদান আছে। শুধু পর্দার প্রতি আপনার মনোযোগ কী করে বাড়ানো যায়, সেজন্য কাজ করছেন তারা। এদিকে রাসকিন নিজেও একজন ইঞ্জিনিয়ার। ২০০৬ সালে অফুরন্ত স্ক্রল করার পদ্ধতি ডিজাইন করেছেন তিনি। যেটা এখন বেশিরভাগ অ্যাপেই ব্যবহার করা হচ্ছে।

গবেষণা বলছে অতিরিক্ত সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের সঙ্গে বিষণ্ণতা, একাকিত্ব এবং অন্যান্য মানসিক সমস্যার সম্পর্ক আছে। ব্রিটেনে তরুণ-তরুণীরা এখন সপ্তাহে ১৮ ঘণ্টা ফোনের পেছনে ব্যয় করছে। এর বেশিরভাগই সামাজিক মাধ্যমে যায়।

মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসক অধ্যাপক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এই ভিডিওগুলো এমনভাবে তৈরি করা, যাতে না চাইলেও চোখ আটকে থাকে। শুধু শুধু দেখতেই থাকবেন। এগুলোতে এক ধরনের মাদকতা আছে। যিনি দেখছেন তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মঘণ্টা চলে যাচ্ছে। এটা বুঝতে পেরেও তিনি কিছু খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করাচ্ছেন এই বলে যে, এসব ভিডিও তার জ্ঞান বাড়াবে। লক্ষ্য উদ্দেশ্য ছাড়া কেবল সময় কাটাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অহেতুক ভিডিও দেখতে থাকাটা ক্ষতিকর।’

ভিডিও কনটেন্ট নিয়ে কাজ করেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় সাকিব বিন রশিদ। তিনি মনে করেন, ‘ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মে যারা জড়িত তারাই যে কেবল আসক্তি তৈরির কারণ তা নয়। যারা কনটেন্ট তৈরি করেন তারাও বানানোর সময় মাথায় রাখেন যাতে যেকোনও উপায়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক দর্শক টানতে এবং ধরে রাখতে পারে। পুরো প্রক্রিয়াতে যিনি ভোক্তা, অর্থাৎ যিনি ভিডিওটা দেখছেন তার দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। কেননা কনটেন্টের ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ নেই। কনটেন্ট অবাধ। এ ধরনের পরিস্থিতিতে একটি সার্বিক মনস্তাত্ত্বিক গবেষণা দরকার। এরপর দরকার সচেতনতা। যারা আসক্ত, তাদের বোঝাতে হবে যে তারা সত্যিই আসক্ত।’

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC