খাদ্যশস্য রফতানিতে চলমান অচলাবস্থা কাটাতে ফের আলোচনায় বসছে ইউক্রেন ও রাশিয়া। বুধবার (১৩ জুলাই) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বহুপাক্ষিক এ বৈঠক শুরু হচ্ছে।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন তুরস্ক ও জাতিসংঘের কর্মকর্তারাও। কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী ইউক্রেনের ওডেসা বন্দর থেকে কীভাবে শস্য রফতানি শুরু করা যায়, সেটাই এ বৈঠকের প্রধান আলোচ্য। খবর আল-জাজিরা ও রয়টার্স।
এ বৈঠকের মাধ্যমে নতুন করে আবারও শস্য রফতানি শুরু হবে বলে আশা করছে ইউক্রেন। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, শস্য রফতানির জন্য রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন তারা। আল-জাজিরা জানিয়েছে, বৈঠকের লক্ষ্যে ইউক্রেন, রাশিয়া, তুরস্ক ও জাতিসংঘের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ইস্তাম্বুলে এসে পৌঁছেছেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনমতে, এ মুহূর্তে ইউক্রেনের ২ কোটি টনের বেশি খাদ্যশস্য কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী ওডেসা বন্দরে আটকে রয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়ার অবরোধের কারণে কয়েক ডজন শস্যবোঝাই জাহাজ আটকা পড়েছে। কিয়েভ ও পশ্চিমারা মস্কোর কাছে অবরোধ তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে।
কৃষ্ণ সাগরের সম্ভাব্য নিরাপদ করিডোরের মধ্য দিয়ে ইউক্রেনের শস্য রফতানির সুযোগ করে দিতে গত মাসে মস্কোয় রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে আলোচনা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয় উভয় পক্ষ। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার বহুপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
বিশ্বের শীর্ষ সরবরাহকারী দেশগুলোর অন্যতম ইউক্রেন। তবে রুশ আগ্রাসনের জেরে রফতানি অচল হয়ে পড়লে বিশ্বজুড়ে খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ উভয় দেশের পাশাপাশি সামুদ্রিক প্রতিবেশী তুরস্ককে একটি নিরাপদ করিডোর তৈরির বিষয়ে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার দখলে থাকা দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন এলাকা পুনরুদ্ধারের মিশনে নেমেছে ইউক্রেন। এখন থেকে প্রায় দুই মাস আগে এ এলাকার দখল নেয় রুশ বাহিনী। নতুন অভিযানের অংশ হিসেবে গত সোমবার সন্ধ্যায় শহরটির নোভায়া কাখোভকাতে দূরপাল্লার রকেট হামলা চালায় ইউক্রেনীয় বাহিনী।
রাশিয়া জানিয়েছে, ওই হামলায় সাতজন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। তবে ইউক্রেন বলছে, অন্তত ৫২ জন রুশ সেনা নিহত হয়েছে।
কিয়েভের দাবি, ওই অঞ্চলে রাশিয়ার একটি গোলাবারুদ ডিপোয় রকেট হামলা চালানো হয়েছে। এতে অর্ধশতাধিক রুশ সেনার মৃত্যু হয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে এইচআইএমএআরএস মোবাইল আর্টিলারি সিস্টেম দেয়ার পরই এ হামলা চালায় ইউক্রেন। কিয়েভ বলছে, তাদের সেনারা এখন আরও বেশি কার্যকরভাবে এটি ব্যবহার শুরু করেছে।
ইউক্রেনের দক্ষিণ সামরিক কমান্ড বিবৃতিতে বলেছে, রকেট এবং আর্টিলারি ইউনিটের ফলাফলের ভিত্তিতে ৫২ সেনা, একটি হাউইটজার, একটি মর্টার, সাতটি সাঁজোয়া ও অন্যান্য যান, সেই সঙ্গে নোভা কাখোভকায় একটি গোলাবারুদের ডিপো হারিয়েছে রাশিয়া।