সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরকার অনুমোদিত সংগঠন বাংলাদেশ সমিতি ফজিরা জাতীয় শোক দিবসকে অবমাননা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্টের পরিবর্তে তাড়াহুড়ো করে ১৪ ই আগস্ট পালন করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ নেতৃত্বের কোন্দলে কারণেই মূলত এমনটা হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
১৫ আগস্ট স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সমিতির ফটক তালাবদ্ধ দেখে অনেক প্রবাসী ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ফিরে আসেন।
বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ১০ মিনিটে ফুজাইরা সময় রাত ৯টা ১০ মিনিটে, সমিতির দরজা তালাবদ্ধ করা হয় বলে জানায় ফিরে আসা প্রবাসীরা। অন্যান্য সংগঠনের নের্তৃবৃন্দের সাথে ফুজাইরা সমিতির অনেক নের্তৃবৃন্দও ছিলেন।
উপস্থিত সমিতির নের্তৃবৃন্দরা ক্ষুদ্ধ হয়ে প্রতিবেদককে জানান, তাদেরকে বলা হয়েছিল বাংলাদেশ সময় ১২টা ০১ মিনিটে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে, অথচ বাংলাদেশ সমিতি ফুজিরার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ সময় ১১টা ০১ মিনিটে শ্রদ্ধা নিবেদন করে সমিতির সকল লাইট বন্ধ করে গেইটে তালা মেরে চলে যায়,যা নিতান্তই দৃষ্টি কটু লেগেছে।
এহেন কার্যকলাপে ও জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে না পেরে ক্ষুব্ধ মনোভাব প্রকাশ করেন বাংলাদেশ সমিতি ফুজিরা শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল হক মাহাবু, ব্যবসা বিষয়ক সম্পাদক জনাব সাইফুর রহমান,প্রচার সম্পাদক মাহিন উদ্দীন মহিন,কার্যকরি পরিষদের সদস্য ফরিদুল আলম,সাধারণ সদস্যদের মধ্যে উপস্হিত ছিলেন মোহাম্মদ বখতিয়ারুল ইসলাম চৌধুরী, আনিসুর রহমান,ফজল করিম,লুৎফর রহমান।
এছাড়াও আরো উপস্হিত ছিলেন বিদিয়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা জাহেদ হাসান,সভাপতি জনাব দুদু মিয়া তালুকদার, সিনিয়র সভাপতি আলখাছ মিয়া,মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক হাজী শাহিন তালুকদার,সিনিয়র সদস্য মোহাম্মদ সেলিম,ফুজিরা যুবলীগের নের্তৃবৃন্দদের মধ্যে উপস্হিত ছিলেন ফরিদুল আলম, জাকের আহমেদ মোস্তফা,সালেখ আহমদ,গিয়াস সুলতান,কামরুল হাসান পাপলু,আমান উল্লাহ, রিটু শীল,জাহাঙ্গীর আলম,স্বপন বাবু প্রমুখ।
সমিতিতে থালাবদ্ধ পেয়ে তাৎক্ষণিক বাবু তপন সরকার প্রতিষ্টানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা, দোয়া মাহফিল, শোক সভার আয়োজনের পর, জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের ব্যবস্থা করা হয়। উপস্থিত নের্তৃবৃন্দরা জানান সমিতিতে সময়ের আগে জামাত শিবিরের লোক নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের প্রতি এই অবমাননা করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্যে আবুধাবির সভাপতি ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
সমিতির সহ সভাপতি বাবু তপন চৌধুরী জানান, যে সংগঠনটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন সেখানে বঙ্গবন্ধুর নামে কোন অনুষ্টানের উদ্যোগ হলে তারা তা বয়কট করার চেষ্টায় থাকেন। পুর্বেও দুবাই কনস্যুলেট থেকে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছিল সম্পূর্ণ আমিরাত জুড়ে। কিন্তু ফুজিরা শাখার বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ফুজিরাতে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনে অসম্মতি প্রকাশ করে। পরে চট্টগ্রাম প্রবাসী কল্যান পরিষদের ব্যানারে বৃহৎ এ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। অথচ বঙ্গবন্ধু প্রথম ১৯৭৪ সালে শেখ জাইদ এর আমন্ত্রণে আমিরাতে আসলে এর পুর্বে বাংলাদেশীরা অর্থ উপার্জনের জন্যে আমিরাতে আসে নি। জনগণের স্বার্থে এ দুই নেতার দীপাক্ষিক অনেক চুক্তি এ সময় সম্পাদন হয়। সে সময় অর্থনৈতিক লেনদেনের জন্যে জনতা ব্যাংক প্রতিষ্টার প্রস্তাব করা হয় পরে বাংলাদেশ সমিতিও প্রতিষ্টিত হয়। অথচ আজ সেই বঙ্গবন্ধুর নামে কোন আয়োজন করার কথা আসলে তারা তা এড়িয়ে যান এবং এবার জাতীয় শোক দিবসও যথাযত ভাবে পালন না করে একদিন আগেই শোক দিবস পালন করে, তারা জাতীয় শোক দিবসের অবমাননা করেছেন।