আজিজুর রহমান দুলাল (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ ফরিদপুর সদর উপজেলার সিএন্ডবি ঘাট এলাকায় সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতি শনিবারে বসছে অবৈধ গরুর হাট। সরেজমিনে গেলে জানা যায়, গেল পবিত্র ঈদুল আযাহা উপলক্ষে গরুর হাট বসানোর জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে প্রাথমিক নির্দেশনা দিলেও বর্তমানেও বসানো হচ্ছে এই গরুর হাট। ভোক্তা যাতে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে গরু ক্রয় করে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে সে উপলক্ষ্যেই মুলত এই হাট বসানো প্রাথমিক নির্দেশনা দিয়েছিল ফরিদপুর জেলা প্রশাসন। কিন্তু ঈদুউল আযাহা শেষ হয়ে গেলেও শেষ হয়নি এই গরুর হাট। কিছু অসাধূ গরুর দালাল ব্যাবসায়ীরা নিজেদের ব্যাক্তি স্বার্থ হাসিল এর উদ্দেশ্যেই বর্তমানে এই অবৈধ ভাবে হাটটি পরিচালিত করে আসছে। সিএন্ডবি ঘাট এলাকার অসাধূ ব্যবসায়ী আলমগীর ফকির এর নেতৃত্বে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এই গরুর হাট বসে আসছে বলে জানা যায়।
এ ব্যাপরে ফরিদপুর পৌর মেয়র শেখ মাহাতাব আলী মেথু বলেন, ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী টেপাখোলা গরুর হাটটি দীর্ঘকাল ধরে ইজারার মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। ইতোমধ্যে সিএন্ডবি ঘাট এলাকায় একটি গরুর হাট মিলছে। যা ইউনিয়ন পর্যায় থেকে কোন ইজারা দেওয়া হয়নি, বা কোন দপ্তর থেকে ও অনুমোদন নেওয়া হয়নি। হাট কর্তৃপক্ষ অবৈধ ভাবেই সিএন্ডবি ঘাট এলাকায় প্রতিনিয়ত গরুর হাটটি বসিয়ে আসছে। ফরিদপুর পৌরসভার আয়ের একটি বড় অংশ ঐতিহ্যবাহী টেপাখোলা গরুর হাট থেকে আসে। কিন্তু সিএন্ডবি ঘাট এলাকায় এই অবৈধ হাটের কারনে টেপাখোলার বৈধ হাটটি যদি নষ্ট হয় তবে ফরিদপুর পৌরসভা বিকল হয়ে পরবে। এই অবৈধ হাটটি যদি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত না হয়ে থাকে, তাহলে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করেন পৌর মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু। এ ব্যাপারে টেপাখোলা হাটের ইজাদার ও পরিচালক এম,এ, ছালাম লাল এ সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সাড়ে ৪ কোটি টাকা দিয়ে ১ বছরের জন্য পৌরসভা কর্তৃক ইজারা নিয়েছি। করোনাকালীন সময়ে প্রায় ১০টি গরুর হাট আমরা মিলাতে পারিনি। এতে আমরা আর্থীক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। তার মধ্যে অবৈধ একটি হাট মিলেছে সিএন্ডবি ঘাট এলাকায়, যার দুরত্ব টেপাখোলা গরুর হাট থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার। যেখানে একটি টেপাখোলা গরুর হাট থেকে সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী ৫ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে কোন অতিরিক্ত হাট বসানোর নীতিমালায় না থাকলেও প্রশাসনের চোঁখকে ফাঁকি দিয়ে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিন্টু চেয়ারম্যান এর ক্ষমতাবলে তার ভাই আলমগীর ফকির এর নেতৃত্বে অবৈধ গরুর হাটটি চালিয়ে আসছে। এই মিন্টু চেয়ারম্যান আলোচিত দুই ভাই রুবেল বরকতের অন্যতম সহযোগি হয়ে দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে, যার মধ্যে এই অবৈধ গরুর হাটটি অন্যতম দৃষ্টান্ত। প্রতি হাটে ২ থেকে ৩ লক্ষ্য টাকা রাজস্ব কর ফাঁকি দিয়ে আলমগীর ফকির খাজনা আদায় করে আসছে বলে জানান এই হাট ইজারাদার।
এই অবৈধ গরুর হাটের ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুম রেজার সাথে কথা হলে তিনি জানান, পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে জেলা প্রশাসক মহোদয় এর এখতিয়ারে অস্থায়ী ভাবে সিএন্ডবি ঘাট এলাকায় গরুর হাট বসানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু ঈদ পরর্তিতে এই হাট পুনরায় চালু করা হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে আমাদের জানা ছিল না। তবে আমরা এই হাট মেলানোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় বা বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়ের কর্তৃক কোন তথ্য আসেনি, সেই হিসাবে এই হাটটি অবৈধ। আমরা হাটের বিষয়ে অবগত হয়েছি। এ ব্যপারে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাসুম রেজা। সিএন্ডবি ঘাট গরুর হাটের কোন অনুমোদন নেওয়া হয়েছে কিনা আলমগীর ফঁকির এর মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি কোন সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারেনি, পরে লাইনটি কেটে দেন।