আজিজুর রহমান দুলালঃ ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গায় ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট ও মহিলাসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে আলফাডাঙ্গা থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে আটককৃতদের আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল হায়দার(৩০) নোয়াখালী জেলার সুধারাম উপজেলার সোনাপুর গ্রামের আহসানউল্লাহ মাস্টারের ছেলে।এদিকে ভুয়া সাংবাদিক রেজাউল করিম খান(২৫) জামালপুর জেলার সদর উপজেলার খরখড়িয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম খানের ছেলে,আরাফাত হোসেন(২৩) গাজীপুর জেলার বাসন উপজেলার মোঘরখাল গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে, শামীম হোসেন(৪০) গাজীপুর জেলার বাসন উপজেলার মধ্য চান্দড়া গ্রামের শাহ আলমের ছেলে,ড্রাইভার আতাউর রহমান(৪৫) গাজীপুর জেলার বাসন উপজেলার দিঘীরচালা গ্রামের মুতু্যূ আরব আলীর ছেলে।অপরদিকে আরও দু’জন ভুয়া নারী সাংবাদিক জীবনী(১৮) শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের আ. রাজ্জাকের মেয়ে ও সোমা(১৮) জামালপুর জেলার সদর উপজেলার জুয়াইলপাড়া (সুলটিয়া বাজার) গ্রামের শাহজাহান আলীর মেয়ে।
জানা যায়,গত বুধবার সন্ধ্যায় আলফাডাঙ্গা পৌর এলাকায় বাকাইল মাদ্রাসা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মামলার বাদী উপজেলার ইউসুবেরবাগ গোরস্তান মাদ্রাসা ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা মোঃ শরফুদ্দিন মোল্যা(৪৯) সাংবাদিক জানান, এ ঘটনার দিন আমি নিজ বাড়িতে দুপুরের খানা খেতে বাড়িতে যাই,ইতিমধ্যে আমার মাদ্রাসার শিক্ষক হাসমত আমাকে মোবাইল ফোনে জানায় যে, মাদ্রাসায় অডিট করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিক এসেছে। এ সংবাদ শুনে আমি দ্রুত মাদরাসায় প্রবেশ করি। আমাকে দেখে তারা ম্যাজিস্ট্রেট ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বলে, সমাজসেবা মন্ত্রনালয়ের অনুমতি স্বাপেক্ষে মাদ্রাসায় অডিট করতে এসেছি। মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনেক দূর্নীতি হচ্ছে। এক পর্যায় তারা অডিট করার খরচের টিএ ও ডিএ বিল বাবদ আমার নিকট হইতে ৩ হাজার টাকা চাঁদা গ্রহন করে এবং অডিট খরচ বাবদ আরও ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। বাকী টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য নির্দেষ দেয়।এরপর তারা বিকালে পৌর এলাকায় বাঁকাইল মাদ্রাসায় ঢুকে একই কায়দায় মাদ্রাসার মুহতামিমের কাছ হতে টাকা হাতানোর চেষ্টা করে।
মাদ্রাসা মুহতামিম হাফেজ মোঃ ইদ্রিস আলী(৫০) সাংবাদিককে জানান, বিষয়টি আমার সন্দেহ হলে স্থানীয় সাংবাদিকদের খবর দিয়ে ঘটনাটি খুলে বলি।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা প্রেকক্লাবের সভাপতি সেকেন্দার আলম জানান, আমি আমি আমার কিছু সহকর্মীদের নিয়ে ওই মাদ্রাসায় গিয়ে তাদের কাছে থাকা আইডি কার্ড যাচাই করে তাদের স্ব-স্ব অফিসে কথা বলে জানতে পারি যে, তারা অবৈধ লাভের উদ্দেশ্যে ঢাকা হতে আলফাডাঙ্গায় বিভিন্ন মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে সরকারি কর্মচারি পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবী করেছে। তাছাড়া অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা কোন সন্তোষজনক জবাব দিতে পারে নাই। পরে তাদেরকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইউনুচ আলী বিশ্বাস বলেন, তাদের ব্যবহৃত গাড়ী, যার নাম্বর ঢাকা- মেট্রো-চ-১৬-৩৪৫৭, (নোয়া গাড়ি), ক্যামেরা, পাঁচটি মোবাইল ফোন, চার্জার, দৈনিক প্রথম বেলা, দৈনিক বিজয় বাংলা, দৈনিক নাগরিক ভাবনাসহ বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার একাধিক ভুয়া আইডি কার্ড ও কিছু ভুয়া কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওসি ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আটককৃতরা মূলত একটি প্রতারক চক্র । তাদের কাছে বিভিন্ন ভুয়া কাগজপত্র পাওয়া গেছে। প্রাথমিক পর্যায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী প্রমাণিত হয়েছে । বিদায় একটি মামলা হয়েছে ।মামলা নং ৪ তাং ১২.১০.২২ ।