ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুর পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জোর পুর্বক ভোট আদায় করার জন্য ভোটরদের কুপিয়ে রক্তাত্ব জখম করার অভিযোগ উঠেছে, পরাজিত ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মো: বাহালুল দিনার সাঈদ ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি উল্লেখ করে ফরিদপুর সদর উপজেলার পশ্চিম খাবাসপুর এলাকার হাজী শরিয়াতুল্লাহ জব্বার এর পুত্র মোঃ মামুনুর রশিদ বাদি হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। যার মামলা নং- উপজেলা কোতয়ালী নং- ২৪ (জিআর নং- ৭৭০/২০), তাং- ১২-১২-২০২০।
মামলার অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত ১০ ই ডিসেম্বর ফরিদপুর পৌরসভা নির্বাচন চলাকালীন মামলার বাদি মোঃ মামুনুর রশিদ এর ছোট ভাই মুনায়েমকে মেরে রক্তাত্ব জখম করে। মামলা সুত্রে জানা যায়, নির্বাচন চলাকালীন শহরের পশ্চিম খাবাসপুর আল আমিন প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাজারের পশ্চিম পাশে বরিশাল সড়ক সংলগ্ন অবস্থান করা অবস্থায় ১। আসাদ মিয়া (৩০) ২। অলিদ (২৮) ৩। মো: বাহালুল দিনার সাঈদ মিয়া (৩৩) ৪। দ্বীপ্ত (২১) ৫। নীরব (২২) ৬। নাহিদ (৪২) ৭। জাহিদ মিয়া (৪০) ৮। মাহামুদ মিয়া (৬২) ৯। রাজমিক (২২) সর্ব সাং- শহরের পশ্চিম খাবাসপুরসহ আরো অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন মিলিয়া মামলার বাদি মাঃ মামুনুর রশিদ এর ছোট ভাই মুনায়েম এর নিকট ফরিদপুর পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী মো: বাহালুল দিনার সাঈদ মিয়া পানির বোতল মার্কায় ভোট চায়। মুনায়েম এর ভাই উক্ত নির্বাচনে প্রার্থী থাকায়, তিনি পানির বোতল মার্কায় ভোট দিতে অস্বীকার করলে মামলার ১ নং আসামী আসাদ তাদের সঙ্গে থাকা অন্যান্যদের হুকুম দিয়া বলে যে, ওর বড় ভাইকে ভোট দেওয়ার স্বাধ মিটিয়ে দে। তার নির্দেশে মামলার ২ নং আসামী অলিদ পুর্ব পরিকল্পিত ভাবে তার সঙ্গে থাকা একটি ছেনদা বের করে মুনায়েম কে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তার মাথা লক্ষ করে কোপ মারলে, মুনায়েমের ঘাড়ের নিচ হতে পিঠ পর্যন্ত লাগিয়া গুরুতর রক্তাত্ব জখম হয়। উক্ত কোপ খেয়ে মুনায়েম মাটিতে লুটিয়ে পরলে, মামলার ৩ নং আসামী ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মো: বাহালুল দিনার সাঈদ এর হাতে থাকা রাম দা দিয়ে মুনায়েমকে কোপ মারিলে, তার হাতে রক্তাত্ব জখম হয়।
এসময় মামলার ৪ নং আসামী দীপ্তর হাতে থাকা চায়নিজ কুড়াল দিয়ে মুনায়েমের মাথা লক্ষ্য করে কোপ ছুরলে, মুনায়েম বাম হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে, তার ঐ হাতেও কাটা রক্তাত্ব জখম হয়। এসময় মুনায়েমকে উক্ত সন্ত্রাসীদের হাত থেকে উদ্ধার করতে, তার ভাগিনা মুন (৩০) আগাইয়া আসিলে, মামলার ৬ নং আসামী নাহিদ মিয়ার হাতে থাকা রামদা দিয়া মাথা লক্ষ্য করে কোপ মারিলে, উক্ত কোপ মুনের মাথার বাম পাশে লাগিয়া মাথা হইতে চোয়াল পর্যন্ত কাটিয়া গুরুতর রক্তাত্ব জখম হয়। এতেও ক্ষান্ত না হয়ে মামলার ৪ নং আসামী মাহমুদ মিয়ার হাতে থাকা রামদা দিয়ে মুনকে কোপ মারিলে, উক্ত কোপে হাতে লাগিয়া গুরুতর রক্তাত্ব জখম হয়। এ ছাড়ার মামলার অন্যান্য আসামীগণ লোহার রড দিয়া মুনায়েম ও মুনকে এলোপাতারি পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা জখম করেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। মামলা সুত্রে আরো জানা গেছে, মামলার ৭ নং আসামী জাহিদ মিয়া, আহত মুনায়েম এর নিকট থেকে ১৭ হাজার ৫ শত টাকার একটি মোবাইল ফোন ও ৯ নং আসামী, আহত মুনের পকেটে থাকা ১২ হাজার ৫ শত টাকার একটি মোবাইল ফোন এবং মামলার ৫ নং আসামী, আহত মুনায়েম ও মুনের নিকট থেকে ১২ হাজার ৬৫০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ছাড়াও এই দিনার এর বিষয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে তিনি এলাকায় জোর জুলুমের তান্ডব চালিয়ে আসছে। মুলত তার একটি ডিশের ব্যবসা রয়েছে। এই ডিশের লাইন জোর করে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন বাড়িতে গিয়েও তিনি জোর জুলুম করেছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে মামলার বাদির সাথে কথা বলে জানা যায়, ১০ ডিসেম্বর ফরিদপুর পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কাউন্সিলর প্রার্থী দিনার ও তার সঙ্গীদের নিয়ে আমার ভাই ও ভাগিনাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাত্ব জখম করেছে। এ ছাড়াও আমাদেরকে উক্ত ঘটনা করো কাছে প্রকাশ না করার জন্যেও হুমকি প্রদান করেছে। তাই সুষ্ঠ তদন্ত পুর্বক মামলা উল্লেখিত আসামীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন, ফরিদপুর সদর উপজেলার পশ্চিম খাবাসপুর এলাকার মোঃ মামুনুর রশিদসহ তার পরিবার। উক্ত বিষয়ে জানার জন্য অভিযুক্তর বাসায় গেলে, ঘর তালাবদ্ধ থাকায় কাউকে পাওয়া যায়নি।