ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার উমর নগর চন্দনী দাখীল মাদ্রাসার সুপার, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া নিয়োগে মোটা অংকের আর্থিক লেনদেন এর অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার সভাপতি এনামুল হকের বিরুদ্ধে। উক্ত নিয়োগ বন্ধের দাবিতে মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ সহ এলাকাবাসি গত ১৭ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ২০২০ তারিখে মাদ্রাসা মাঠে বিশাল এক মানববন্ধন করেন। এ সময় মানববন্ধনে বক্তারা এনামুলের বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতির কথা তুলে ধরেন।
তারা বলেন অত্র মাদ্রসার সভাপতি এনামুল হক মোটা অংকের অর্থ গ্রহনের মাধ্যমে সম্পুর্ন স্বেচ্ছাচারি ভাবে সুপার, নিরাপত্তা কর্মী, এবং আয়া পদে নিয়োগ প্রদানের চেষ্টা করছে। এ সময় অভিযোগে আরো বলা হয়, উক্ত মাদ্রাসায় সহ-সুপার পদে কর্মরত আলী আহম্মদ এর নিকট থেকে ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সুপার পদে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার পায়তারা করছে এনামুল হক। এ ছাড়াও চন্দনী গ্রামের মোহাম্মদ দবীর শেখের ছেলে ইব্রাহীম শেখের নিকট থেকে ২ লক্ষ টাকা গ্রহন পুর্বক নিরাপত্তা কর্মী, একই পদে নিয়োগের জন্য নয়ানি পাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নান শেখের ছেলে রুবেল শেখ এর নিকট থেকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং ফেলান নগর গ্রামের হেলালের স্ত্রী লিপিকে আয়া পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ২ লক্ষ টাকা গ্রহন করেছেন। নিয়োগের স্বচ্ছতার দাবি করে ফরিদপুর বোয়ালমারী উপজেলার বিজ্ঞ সহকারি জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার নং দেওয়ানি ৩৬/২০। মামলাটি আদালতে চলমান থাকা স্বত্ত্বেও আগামী ২০-১১-২০২০ তারিখে নিয়োগ প্রক্রিয় সম্পন্ন করার দিন ধার্য করা হয়েছে বলে সুত্রে জানা যায়।
অভিযোগকারী আব্দুল মান্নান বলেন, এনামুল সভাপতি হওয়ার পরে মাদ্রাসায় অনিয়ম এবং দূর্নীতি চরমে উঠেছে। তিনি মাদ্রাসার গাছ বিক্রি ও একটি পুরাতন ঘর বিক্রি করে সম্পুর্ন টাকা নিজে আতসাৎ করেছেন। এছাড়াও বিগত সংসদ সদস্য মাদ্রাসার গেট করার জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন, ৩ বছর এর বেশি সময় পার হয়ে গেলেও উক্ত গেট এখনো তৈরি করা হয়নি। নিয়োগের ব্যাপারে মো: আবু সাঈদ আমিন বলেন নিয়োগকে পূজি করে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে এনামুল। আর এক অভিযোগকারী মো: মতিয়ার মোল্লা বলেন, উনি সহ-সুপারকে টাকার বিনিময়ে সুপার বানাবেন, এভাবে সহ-সুপার পদ খালী করে পুনরায় সহ-সুপার পদে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছেন। এ ব্যাপারে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক (প্রশাসন) মো: শাহীনুর ইসলাম এর সংঙ্গে এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ২০ শে নভেম্বর একটি নিয়োগ পরীক্ষার দিন ধার্য করা হয়েছিল, কিন্তু আমি নানা অনিয়ম এবং এ বিষয়ে আদালতে মামলা থাকার ব্যাপারে অবগত হয়ে নিয়োগ পরীক্ষার সাময়ীক বন্ধ রাখার নির্দেশনা প্রদান করেছি। উল্লেখিত অনিয়ম ও দূর্নীিিতর ব্যাপারে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তিসহ অবিলম্বে অভিযুক্ত এনামুলকে সভাপতি পদ থেকে অপসারণ এর দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। এ ব্যাপারে ফরিদপুর জেলা প্রশসকের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন উক্ত মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো: আবু সাঈদ আমিন, মো: মতিয়ার মোল্লা, ও মোসা: ফাতেমা বেগম। অভিযুক্ত এনামুলের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন।