বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের ফকিরহাটে চিকিৎসক কর্তৃক ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে আল্ট্রাসনোগ্রাম রুমে নিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এপেন্ডিক্সের কারণে পেটে ব্যাথা নিয়ে লাইফ কেয়ার ক্লিনিক এণ্ড ডায়াগনিষ্টিক নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে গেলে ওই কিশোরীকে গর্ভবতী বলে রিপোর্ট প্রদান এবং ভয় দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেয় বলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কিশোরীর পরিবারের দাবী।
সোমবার (২৪) সকালে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এএসএম মফিদুল ইসলাম ভুক্তিভোগী পরিবারের দেওয়া অভিযোগ পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কিশোরীর মা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার পাইকপাড়া এলাকার এক কিশোরী পেটে ব্যাথা নিয়ে গত ১৯ জুলাই ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে চিকিৎসক তাকে আল্ট্রসনোগ্রাম করার জন্য বলেন। এসময় ওই কিশোরীর মা তাকে নিয়ে উপজেলা মোড়ে লাইফ কেয়ার ক্লিনিক এণ্ড ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে যান। আল্ট্রাসনোগ্রাম কক্ষে দায়িত্বে থাকা ডা. নাফিউল ইসলাম কিশোরীকে একা রেখে তার মাকে বের করে দেয়।
এরপর আল্ট্রাসনোগ্রাম করার সময়ে ডা. নাফিউল ওই কিশোরীকে জানায় সে গর্ভবতী এবং কুপ্রস্তাব দিয়ে বলেন তাকে খুশি করলে গর্ভের সমস্যার সমাধান করে দিবেন। এসময় ওই চিকিৎসক কিশোরীর হাত ধরে জোর করে চুমু দেয়। ভয় পেয়ে কিশোরীটি আল্ট্রাসনোগ্রাম কক্ষ থেকে দ্রুত বের হয়ে আসে।
বিষয়টি কিশোরী তার অভিভাকদের জানালে তারা তৎক্ষনাৎ ডিজিটাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনিষ্টিকস সেন্টার নামে অপর একটি প্রতিষ্ঠানে গিয়ে পুণরায় আল্ট্রাসনোগ্রাম করেন। সেখানে ওই কিশোরীর এপেন্ডিক্সের সমস্যা ধরা পড়ে। এছাড়া কিশোরীর দুটি রিপোর্ট ও পেটে ব্যাথার উপসর্গ দেখে চিকিৎসক তার এপেন্ডিক্স হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। এ প্রতিবেদকের কাছে ওই কিশোরীকে দেওয়া সেই রিপোর্ট ও অভিযোগপত্রের কপি রয়েছে।
ফকিরহাটের লাইফ কেয়ার ক্লিনিক এণ্ড ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের মালিক লিটন কুণ্ডু জানান, ঘটনার পর ডা. নাফিউল ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. নাফিউল ইসলাম বলেন, ‘ওই কিশোরীর আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট ভুল করেছি। কিন্তু তার সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করিনি। তারা ভুল বুঝেছে।’
ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এএসএম মফিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে সিভিল সার্জন স্যারের নির্দেশে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করার প্রক্রিয়া চলছে। ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হবে।
উল্লেখ্য ফকিরহাটের লাইফ কেয়ার ক্লিনিক এণ্ড ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে একাধিক ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া সহ অনেক অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। ধারাবাহিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে এই সকল ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করা লাইফ কেয়ার ক্লিনিক এণ্ড ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারের লোমহর্ষক ঘটনা জনসম্মুখে তুলে ধরবো হবে।
এরা মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি লেখছে কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি অতি দ্রুত এদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক।