সাত মাসের প্র্যাগনেন্ট এক বাংলাদেশি নারী ছাড়া বাকী সবাইকে ফেরত পাঠিয়েছে ইতালি। দু’টি ফ্লাইটে বুধবার ইতালি যাওয়া ১৬৮ বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীকে দোহাগামী ফিরতি ফ্লাইটে তুলে দিয়েছে দেশটির ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট। তবে তারা ওই ফ্লাইটে থাকা ইতালিয়ান পার্সপোর্টধারী ১৪ জনকে গ্রহণ করেছে, নিজেদের নাগরিক বলে।
বাংলাদেশ মিশন জানায়, বুধবার ঢাকা থেকে দোহা হয়ে ১৮৩ জন ইতালি যান। তাদের সারাদিন বিমান থেকে নামতেই দেয়নি কতৃপক্ষ। মানবিক কারণে তাদের গ্রহণ করতে বাংলাদেশ দূতাবাস রোম এবং মিলানস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট তাৎক্ষণিক নোট ভারবাল পাঠিয়ে জোর অনুরোধ করেছিল। কিন্তু না, ইতালি সরকার তার নীতি বা সিদ্ধান্তের প্রশ্নে একচুলও নমনীয় হয়নি বা নড়েনি। তারা শেষ পর্যন্ত ইতালিয়ান পাসপোর্টধারী ১৪ জন এবং বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী ৭ মাসের প্র্যাগন্যান্ট একজন নারীকে গ্রহণে সম্মত হয়।
বাকী সবাইকে ফেরত পাঠায়। এর মধ্যে মিলানে নামা ৪০ যাত্রীর ৩৯ জনকে দোহাগামী ফিরতি ফ্লাইটে ফেরত পাঠানো হয়। একজন নারী যাত্রী অপেক্ষমাণ অবস্থায় বিমানবন্দরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সুস্থ হওয়ার পর তাকেও ফেরত পাঠানোর কঠিন সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ মিশনের দায়িত্বশীল সূত্র রাত ১১ টার দিকে (বাংলাদেশ সময়) মানবজমিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করে।
এদিকে, আগেই খবর বেরিয়েছে কাতার এয়ারওয়েজের অপর ফ্লাইটে ইতালির রোমে যাওয়া ১২৫ বাংলাদেশিকে বিমান থেকে নামতে দেয়া হয়নি। বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে ফিউমিসিনো বিমানবন্দরে ওই বিমানটি অবতরণ করে। ইতালির জাতীয় দৈনিক ইল মেসসাজ্জেরোর অনলাইন সংস্করণের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বাংলাদেশি যাত্রীদের ইতালিতে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ফেরত যাত্রীদের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করে ইতালি কর্তৃপক্ষ। এরপর বাংলাদেশের সঙ্গে এক সপ্তাহের জন্য সকল
ফ্লাইট বাতিল ঘোষণা করে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশের সঙ্গে ফ্লাইট বাতিল করলেও কাতার থেকে যাওয়া ফ্লাইট চালু রেখেছে ইতালি। তাই দোহা থেকে যাওয়া ওই ফ্লাইটটির বাংলাদেশি যাত্রীদের ইতালি প্রবেশে কোনো বাধা থাকার কথা ছিল না। কিন্তু ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে ইল মাসসাজ্জেরো জানায়, ওই ১২৫ বাংলাদেশি ইতালিতে প্রবেশ করতে পারবেন না। এমনকি তাদের বিমান থেকেও নামতে দেয়া হবে না। কেবলমাত্র জরুরি স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন এমন যাত্রীরা নামতে পারবেন। ওই বিমানেই স্থানীয় সময় বিকালে তাদের ফেরত পাঠানো হবে।
রোমের বাংলাদেশ মিশনের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি আছে। আগে ১২৫ বলা হলেও বাংলাদেশ থেকে রোমে যাওয়া যাত্রীর সংখ্যা ছিল ১৪৩ জন।
উৎসঃ মানবজমিন