বগুড়ায় বান্ধবীকে আইফোন কিনে দিতে বাবার সঙ্গে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির নাটক ফাঁস হয়ে গেছে। র্যাব সদস্যরা সোমবার মধ্য রাতে দুপচাঁচিয়া থেকে ছেলে কলেজছাত্র ও তার বন্ধুকে উদ্ধার করেছেন।
মঙ্গলবার তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় দিয়ে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। র্যাব-১২ বগুড়া স্পেশাল কোম্পানির কমান্ডার লে. কমান্ডার আবদুল্লাহ আল মামুন মঙ্গলবার বিকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য দিয়েছেন।
এরা দুজন হলো- বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার নামাজখালী গ্রামের ওবায়দুল সরকারের ছেলে সরকারি আজিজুল হক কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাকিবুল হাসান রিয়াদ (১৯) ও তার সহপাঠী জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মোলামগাড়ীহাট এলাকার প্রবাসী মইফুল আকন্দের ছেলে মুন্না হাসান (১৮)।
র্যাব সূত্র জানায়, কলেজ ছাত্র রিয়াদের সঙ্গে এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক আছে। সে প্রেমিকার দাবি মেটাতে বা তাকে খুশি করতে একটা আইফোন উপহার দেওয়ার চিন্তা করে। এ ফোন কিনে দিতে অন্তত লাখ টাকার প্রয়োজন। তাই সে বিষয়টি নিয়ে তার বন্ধু মুন্নার সঙ্গে আলোচনা করে। সিদ্ধান্ত হয় রিয়াদের অপহরণ নাটক করে বাবা বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা ওবায়দুল সরকারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে লাখ টাকা আদায় করবে।
পরিকল্পনা অনুসারে রিয়াদ গত ২৪ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়। কিছুক্ষণ পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রাতে বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান পাননি। পরদিন রিয়াদের মা সোনাতলা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
২৬ জুলাই সকালে রিয়াদের ফোন থেকে বাবার মোবাইলে ফোন আসে। ওপার থেকে বলা হয়, ছেলে রিয়াদকে জীবিত ফেরত পেতে এক লাখ টাকা রেডি করেন। এ সময় রিয়াদ ফোনে কান্নাকাটি করে জানায় অপহরণকারীরা তাকে টাকার জন্য মারপিট করছে। এতে বাবা-মা টাকা দিতে রাজি হন। ছেলে অপহরণ হয়েছে ভেবে ওবায়দুল সরকার বিষয়টি র্যাব বগুড়া ক্যাম্পে অবহিত করে সহযোগিতা চান।
এদিকে র্যাবের চৌকস গোয়েন্দা টিম অনুসন্ধান করে জানতে পারেন, রিয়াদ ও তার বন্ধু মুন্নার টাকা আদায়ের জন্য অপহরণ নাটকের অভিনয় করছে। অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর র্যাব সদস্যরা সোমবার মধ্য রাতে বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে উদ্ধার করেন। এতে অপহরণ নাটকের অবসান হয়।
র্যাব কমান্ডার আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে রিয়াদ ও মুন্না জানিয়েছে- বান্ধবীকে আইফোন কিনে দিতে তারা অপহরণ, মারপিট ও মুক্তিপণ দাবির নাটক সাজিয়েছিল। পরিকল্পনা মোতাবেক ফোন বন্ধ রেখে মুন্না তার মোটরবাইকে রিয়াদকে নিয়ে বগুড়া ও জয়পুরহাটের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে। উদ্ধারের পর দুজনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে এমন কর্মকাণ্ডে নিজেদের জড়াবে না বলে তারা মুচলেকা দেয়।