আবদুল্লাহ আল মামুন, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি:
বনবিভাগ ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে সকল ধরনের পাস বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। বন বিভাগের ঘোষণা অনুযায়ী বন্ধ থাকলেও লোকালয়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ্য ছোট কাঁকড়া বিক্রয় হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনো ভূমিকা দেখা যায় না।
বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায়, প্রশাসনের যোগসাজশে সুন্দরবনের কাঁকড়া নিধনে নেমেছে প্রজেক্ট মালিকরা ও একদল অসাধু ব্যবসায়ী। শ্যামনগর উপজেলার কলবাড়ি, হরিনগর, সুন্দরবন, মীরগাং, ভেটখালী, বুড়িগোয়ালিনী, গাবুরা, চাঁদনীমুখাসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার কয়রা, কাঠকাটা, ঘড়িলাল, আংটিহারা, জোড়শিং ও পাইকগাছা থেকে সড়ক ও নৌপথে প্রতি রাতে ৩-৪ হাজার কেজি ধরা ও বিক্রয় অযোগ্য ছোট কাঁকড়া নিয়ে আসা হচ্ছে বুড়িগোয়ালিনীতে অবস্থিত দুই শতাধিক সফট সেল ফার্মে। বেশি লাভের আশায় জোট বেঁধে ছোট কাঁকড়া সংগ্রহ করেছেন একদল অসাধু ব্যবসায়ী। ব্যাবসায়ীরা অধিক হারে ছোট কাঁকড়া ম্যানেজ করে দিয়ে প্রজেক্ট মালিকদের মন জয় করে আদায় করে নিচ্ছে পালসার মটরসাইকেল, ফ্রিজ, টিভি এমন কি আলিশান বাড়িও।
অতিরিক্ত লাভের আশায় প্রজেক্ট মালিকদের কাছ থেক মোটা অংকের টাকা আগাম নিয়ে অসাধু ব্যাবসায়ীরা স্থানীয় জেলেদেরকে দাদন দিয়ে সুন্দরবনে ছোট কাঁকড়া ধরতে পাঠায়। ধরে আনা কাঁকড়া। অধিক দামে কেনার কারণে অতিরিক্ত লাভের আশায় ছোট কাঁকড়া আহরণকারীরা একপ্রকার আসক্ত হয়ে পড়েছেন। ছোট কাঁকড়া ক্রয় ও বিক্রয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বারবার অবগত করা হলে এখনে কোন রকম পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বড় কাঁকড়া ব্যবসায়ী বলেন, ছোট কাকড়ার চাহিদা বেশি হওয়ায় আমরা মারাত্মক হুমকির মধ্যে আছি। সুন্দরবনে দেখা দিয়েছে বড় কাঁকড়ার অভাব। দিনে কমা শুরু করেছে নদীর কাঁকড়া। সারাদিনে যে বড় কাঁকড়া হয় তা বিক্রি করে ঠিকমতো সংসার চালাতে পারছি না। অতিরিক্ত লাভের আশায় ছোট কাঁকড়া আহরণকারীরা একপ্রকার আসক্ত হয়ে পড়েছেন। পরিবেশবিদ মোহন কুমার মন্ডল বলেন, সুন্দরবন থেকে ছোট কাঁকড়া ধরা বন্ধ না করলে হুমকির মধ্যে পড়বে সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্য। তাই সকলকে সুন্দরবন রক্ষায় এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
পশ্চিম সুন্দরবনের রেঞ্জ কর্মকর্তা এমএ হাসান জানান, ছোট কাঁকড়া ধরা বন্ধ করতে আমরা সব সময় তৎপর আছি। গত ১ তারিখ থেকে আগামী তিন মাস সুন্দরবনে সকল ধরনের পাস পারমিশন বন্ধ আছে। সুন্দরবন সংশ্লি¬ষ্ট সকল প্রকার অবৈধ কাজের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।