বাংলা এক্সপ্রেস প্রতিবেদকঃ ‘প্রবাসীদের রেমিট্যান্স যোদ্ধ বলা হলেও তাদের অধিকার সম্পর্কে রাষ্ট্র উদাসীন। প্রবাসীর ঘামের টাকায় কেবল পরিবার লাভবান হয় না বরং; পুরো রাষ্ট্র লাভবান হয়। বর্তমানে দেশের রেমিট্যান্সই অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। অথচ সেই প্রবাসীকে যথাযথ মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। প্রবাসে মারা গেলে লাশ বহনে পতাকাবাহী বিমানের অনিহা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিমানবন্দরের হয়রানি তা এখন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ’
বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ দুবাই শাখার নব নির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সংগঠনের নেতারা। শুক্রবার অভিষেক ও মিলন মেলায় সভাপতিত্ব করেন নব নির্বাচিত সভাপতি শেখ মুহাম্মদ বদিউল আলম নোমান। আমিরাতের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান ও আক্তার হোসেনের যৌথ সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী অধিকার পরিষদ ইউএই’র সভাপতি মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএই কমিটির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, আসাদুর রহমান, মোস্তাফা কামাল। স্বাগতিক বক্তব্য রাখেন আল মামুন সহ-সভাপতি প্রবাসী অধিকার পরিষদ দুবাই।
টেলি কনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন সাবেক ভিপি ও সংগঠনের উপদেষ্টা নূরুল হক নূর, প্রকৌশলী কবির হোসেন ও ব্যারিস্টার বিপ্লব কুমার।
বক্তব্য রাখেন আলী হোসেন, মোহাম্মদ হালিম, জাকির হোসেন, নূর হোসেন, হৃদয়, সালাউদ্দিন, মোস্তাফা জামান, সুমন,নবী হোসেন, মিজানুর রহমান, নোমান, দিদার, রফিকুল, শামসুদ্দিন, শওকত, আবু শাহেদসহ অনেকে।
এসময় বক্তারা আরও বলেন, ‘১ কোটি ২০ লাখের বেশি বাংলাদেশি প্রবাসীদের সুযোগ, সুবিধা, অধিকারের জন্য এই সংগঠনের তৈরি। আমরা কারো প্রতিপক্ষ নয়। সরকার বা বিরোধী দল কাউকেই আমরা প্রতিপক্ষ মনে করি না। আমরা শুধু আমাদের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ। যে বা যারা প্রবাসীদের অধিকার নিয়ে কথা বলবে আমরা তাদের ফুলের শুভেচ্ছা জানাবো। এটাই আমাদের সংগঠনের মূল নীতি। আমাদের পরিবার আতঙ্কে নয় শান্তিতে দেশে বসবাস করবে এটাই আমরা চাই। বিমানবন্দরে হয়রানি বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ সময়ের দাবি।’
উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের পক্ষে ১০ দফা দাবি উত্তাপন করেন ইউএই কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাহফুজুর রহমান। তিনি এসময় প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের সহযোগিতা কামনা করেন। ১০ দফা দাবি সমূহ, _
১. প্রবাসে মারা যাওয়া সকল বাংলাদেশী নাগরিকদের মৃতদেহ রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে নিতে হবে।
২. প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটাধিকার চাই।
৩. বিমানবন্দরে প্রবাসী হয়রানি বন্ধ চাই।
৪. প্রবাসীদের দ্বৈত নাগরিকত্ব ও পেনশন সুবিধা চাই।
৫. দালালমুক্ত পাসপোর্ট ও দূতাবাস সেবা চাই।
৬. প্রবাসী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন চাই।
৭. জাতীয় বাজেটে প্রবাসীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ চাই।
৮. বিদেশে কাগজপত্র বিহীন প্রবাসীদের বৈধকরণে সরকারের সহযোগিতা চাই।
৯. বিদেশে প্রবাসীদের জন্য পর্যাপ্ত বাংলাদেশী দূতাবাস ও শ্রম কল্যাণ উইং চাই।
১০. অভিবাসন ব্যয় ১ লাখ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ও প্রবাস ফেরতদের কর্মসংস্থান, সুদমুক্ত পর্যাপ্ত ঋণ চাই।
সব শেষে নবনির্বাচিত কমিটিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি প্রবাসীদের জন্য কাজ করায় বাছাইকৃত নেতাকর্মীদের সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।