ময়মনসিংহ গফরগাঁও উপজেলার বারইহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মারধর করা সেই দফতরিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশে বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দিনগত রাত আড়াইটায় দফতরি মো. রকিব খানকে গ্রেফতার করে পাগলা থানা পুলিশ।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘থানা পুলিশের সঙ্গে যোযোযোগ করে রাত আড়াইটার দিকে দফতরিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাতে সে পালিয়ে না যায়। বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার করতে বলায় বাক-বিতণ্ডার একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষককে মারধর করে সে।’
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাসেম দফতরির শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘দেশের কোথাও কোথাও স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে এবং রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় অর্থ খরচ করে আউট সোর্সিংয়ে নিয়োগ পান কিছু দফতরি। এই ধরনের দফতরিরা কথা শুনতে চান না। সে কারণেই আজ এমন ঘটনা ঘটেছে।’
দফতরির শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে মো. আবুল কাসেম বলেন, ‘শিক্ষকদের নিরাপত্তা চাই। রাষ্ট্রীয়ভাবে সব শিক্ষকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দ্রুত নির্দেশনা দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করায় শিক্ষকদের পক্ষ থেকে মহাপরিচালককে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় বৃহস্পতিবার (২৭ মে) বিকালে বারইহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীলুফাকে অন্যান্য শিক্ষকদের সামনে মারধর করেন দফতরি রাকিব। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৭ মে) বিকালে গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রধান শিক্ষক নিলুফা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষার্থীদের অ্যস্যাইনমেন্ট দিচ্ছেন ও সংগ্রহ করছেন। ঘটনার দিন সকাল থেকেই এ কাজে ব্যস্ত ছিলেন শিক্ষকরা। দুপুরের পর শিক্ষকদের কাছে থাকা ‘ওয়ার্ক শিট’ শেষ হয়ে যায়। পরে প্রধান শিক্ষিকা দফতরি রকিবকে ফোন করে ওয়ার্ক শিট নিয়ে শিক্ষকদের কাছে যেতে বললে রকিব তা শোনেননি। পরে শিক্ষকরাই বিদ্যালয়ে গিয়ে ‘ওয়ার্ক শিট’ সংগ্রহ করেন। ওই সময় রকিব বিদ্যালয়ে গেলে প্রধান শিক্ষিকা বিদ্যালয় পরিষ্কার করতে বলেন রকিবকে। এতে রকিব ক্ষিপ্ত হয়ে অসম্মতি জানান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রকিব খান খুন্তি দিয়ে প্রধান শিক্ষিকার মাথার আঘাত করেন।