ইশারা ভাষার মাধ্যমে পবিত্র কুরআন শরিফ পড়িয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার একটি মাদ্রাসা। যেখানে কুরআনে হাফেজ হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে দেশটির বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুরা। ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ মুখস্থ করার পুরো প্রক্রিয়াই সম্পন্ন হচ্ছে ইশারা ভাষায়।
বিশ্বজুড়েই শিশুদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মানেই হৈচৈ, শোরগোল। কিন্তু, ইন্দোনেশিয়ার ওই মাদ্রাসাটি একেবারেই ব্যতিক্রম। এখানে দলবেঁধে পড়ার শব্দের বদলে টের পাওয়া যায় নিস্তব্ধতা।
মুখে নেই কথা বলার শক্তি, কানেও নেই শোনার ক্ষমতা। কিন্তু অন্তর তো রুদ্ধ হয়ে যায়নি, তাই ইশারা ভাষার মাধ্যমেই পবিত্র কোরআনকে ধারণের চেষ্টা করেন ওই শিক্ষার্থীরা। ইন্দোনেশিয়ার জোগায়াকার্তার এই মাদ্রাসার সব শিক্ষার্থীই বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী।
ইন্দোনেশিয়ার ওই মাদ্রাসার শিক্ষক আবু কাফি বলেন, পুরো ইন্দোনেশিয়ায় এ ধরনের মাদ্রাসা এই একটিই আছে। যারা কথা বলতে কিংবা শুনতে পারে না অথচ আল্লাহর পবিত্র কালামকে মুখস্ত করতে চায়, তাদেরকে অভিভাবকরা নির্দ্বিধায় এখানে দিয়ে যান।
বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে ১১৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন যারা ইশারা ভাষার মাধ্যম কোরআন হেফজ করছেন। ইন্দোনেশিয়ায় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য প্রচলিত শিক্ষায় শিক্ষিত হবার সুযোগ কম। জাতিসংঘ বলছে, মাত্র ৩ শতাংশ প্রতিবন্ধী শিশুর জন্য শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। তার মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ আরও নেই। সেই সঙ্কট কাটাতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলছেন উদ্যোক্তারা।
আবু কাফি আরও বলেন, যারা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন তারাও কোরআন এবং হাদিস পড়তে চায় জানতে চায়। কিন্তু সেই সুযোগ ছিলো না এতদিন। এবার এই উদ্যোগের ফলে যে হাফেজরা তৈরি হবেন, তারা অন্য বাকপ্রতিবন্ধী শিশুদেরও শেখাতে পারবেন। এভাবে চলতে থাকবে। এটাই আমাদের সফলতা।
২০১৯ সালে দারুল আশুম নামের এই মাদ্রাসা চালু করেন আবু কাফি। ইশারা ভাষার মাধ্যমে হেফজ করার উদ্যোগ কতটা সফল হবে, তা নিয়ে শুরুতে সন্দিহান ছিলে অনেকে। কিন্তু, মাত্র তিন বছর না যেতেই দেশে-বিদেশে প্রশংসা কুড়িয়েছে এ পদক্ষেপ। সূত্র: আরব নিউজ।