প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন সফল হয় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রগুলোতে প্রার্থীদের সমর্থক ও এজেন্টদের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এতে পুলিশের কোনো ভূমিকা থাকবে না। নির্বাচন সফল হতে সবচেয়ে বেশি দরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতা ও সহযোগিতা।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি নেপাল সফর নিয়ে সিইসি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সিইসি বলেন, ‘পুলিশ দিয়ে কিন্তু আমি ব্যালেন্স (সমতা) তৈরি করব না। ব্যালেন্সটা তৈরি হবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে প্রার্থীদের ইলেকশন এজেন্টরাই প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যালেন্স তৈরি করবে। তারা (রাজনৈতিক দল) যদি সেই ভারসাম্য তৈরি না করে তাহলে পুলিশ-মিলিটারি দিয়ে সব সময় নির্বাচনকে সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ও আস্থাভাজনভাবে উঠিয়ে আনা সম্ভব হবে না।’
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ডায়ালগ অপরিহার্য জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি মোটাদাগে মতৈক্য না থাকে নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশন সুন্দর নির্বাচন তুলে দিতে পারবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর সহায়তা লাগবে। তাদের মধ্যে একটা সমঝোতা লাগবে। নির্বাচন আয়োজনে একটা অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে দিতে হবে। তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নির্বাচনটা গ্রহণযোগ্য হবে।’
সিইসি বলেন, ‘সরকারের একটা ভিন্ন সত্তা আছে। তার যে মিনিস্ট্রিগুলো আছে, ডিপার্টমেন্টগুলো আছে। যাদের আমাদের সহায়তা করতে হবে। তাদের তরফ থেকে আন্তরিক এবং সদিচ্ছাভিত্তিক সহায়তা না থাকে তাহলে নির্বাচনটাকে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সফল করা সম্ভব হবে না। তাদের সহযোগিতা থাকলে নির্বাচনটা আরও বেশি সুন্দর ও সফল হবে।’
নির্বাচনের আগে নেপালের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবার সংলাপে বসবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেই নাই। আমি মনে করি, ডায়ালগ (সংলাপ) যত করা যায়, সেটা ভালো।’
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ডায়ালগ একেবারেই হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা হওয়া খুব প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। রাজনীতিতে আমরা জড়িত হতে চাই না। কিন্তু রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে আমরা আমাদের আবশ্যক সহায়তা প্রত্যাশা করি।’
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রজ্ঞা আছে উল্লেখ করে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ওনারাও একটু চিন্তা করবেন। রাজপথে শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে একটা সুন্দর নির্বাচন হবে, এটা আমি বিশ্বাস করি না। সব দলই বলতে চাচ্ছে রাজপথে দেখা হবে। রাজপথে শক্তি পরীক্ষা হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আমি বলব, রাজপথে শক্তি প্রদর্শন করে শক্তি দেখিয়ে সত্যিকারের যে গণতান্ত্রিক নির্বাচন, সেটা হবে না। আপনাদের নির্বাচনে আসতে হবে। নির্বাচনের মাঠে নির্বাচনের যে নীতিবিধি আছে, সেই অনুযায়ী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।’