ভিয়েতনামের জঙ্গলে বাবার সঙ্গে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ৪১ বছর ধরে বসবাস করা এক ব্যক্তি জানতেন না যে পৃথিবীতে নারী বলে কিছু আছে। হো ভ্যান ল্যাংয়ের এই গল্পের শুরু ১৯৭২ সালে। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় মার্কিন বোমা হামলায় মা এবং দুই সহোদর নিহত হওয়ার পর সভ্য জগত ছেড়ে যান তিনি। বর্তমানে ৪৬ বছর বয়সী ল্যাং, তার ভাই ত্রি এবং তাদের বাবা কুয়াং নাগাই প্রদেশের টে ট্রা জেলার গভীর জঙ্গলে গিয়ে আস্তানা গাড়েন।
একেবারে বন্য জীবন যাপন করেছেন এই তিন ব্যক্তি। খেয়েছেন মধু, ফল, জঙ্গলের প্রাণী। নিজেদের আশ্রয় নিজেরাই বানিয়েছেন।
২০১৫ সালে পরিবারটির খোঁজ পান আলভেরো সেরেজো নামের এক আলোকচিত্রী। তিনি বলেন, ‘তারা দূর থেকে মানুষ দেখতে পেলেই পালিয়ে যেত।’ ২০১৫ সাল থেকে ভিয়েতনামের একটি গ্রামে নতুন করে খাপ খাইয়ে নেওয়া শুরু করে পরিবারটি। তবে সম্প্রতি সেরেজোকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গলে ফিরে যায় তারা।
নারীদের সম্পর্কে জানতেন কিনা জানতে চাইলে হো ভ্যান ল্যাং জানান, তার বাবা তাদের এই সম্পর্কে কখনও কিছুই বলেননি। তবে গ্রামে থাকতে শুরু করার পর জানতে শুরু করেন তিনি।
সেরেজো বলেন, ‘আজ পর্যন্ত অবাক করার মতো বিষয় হলো তিনি নারী ও পুরুষ আলাদা করতে পারলেও এখন পর্যন্ত জানেন না তাদের মধ্যকার প্রয়োজনীয় পার্থক্য।’
আলভেরো আরও সেরেজো বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি অন্য অনেক কিছুর মতোই কখনও তিনি বংশবৃদ্ধির কথা ভাবেননি।’ ল্যাংয়ের ভাই তাকে ‘মানুষের অবয়বে একটি শিশু’ আখ্যায়িত করেছেন। ল্যাং অনেক মৌলিক সামাজিক ধারণা সম্পর্কে অজ্ঞ। তার পুরো জীবন কেটেছে জঙ্গলে।
গ্রামের সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রথম প্রথম বেশ কষ্ট করতে হয়েছে হো ভ্যান ল্যাংয়ের। তবে নতুন জীবনের সঙ্গে খুশি মনে মানিয়ে নিয়েছেন।
সূত্র: মিরর