পিলখানায় ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের ১৩ বছর । ইতিহাসের এ কালো দিনটি ‘পিলখানা ট্র্যাজেডি দিবস’ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। দিবসটিতে শহীদ ব্যক্তিবর্গের স্মরণে শাহাদতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে। ট্র্যাজেডি দিবস স্মরণে বিজিবি ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে বিপদগামী বিডিআর সদস্যরা বিদ্রোহ করে। তারা তৎকালীন মহাপরিচালক শাকিল আহমেদসহ ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের হত্যার পর লাশ গুম করার চেষ্টা করে। বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এই ঘটনায় তৎকালীন পৃথক মামলা হয়। এর মধ্যে বিদ্রোহ ও হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে বিডিআর হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। মামলায় ৮৩৪ জন আসামির মধ্যে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। এছাড়া ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।
অন্যদিকে বিদ্রোহের ঘটনায় অভিযুক্ত ৬ হাজার ৪১ জনের মধ্যে ৫ হাজার ৯২৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
বিজিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে শহীদ ব্যক্তিদের স্মরণে শুক্রবার শাহাদতবার্ষিকী পালিত হবে। দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী শহীদ ব্যক্তিদের রুহের মাগফিরাতের উদ্দেশ্যে পিলখানার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরসহ দেশের সব রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় খতমে কুরআন, বিজিবির সব মসজিদ এবং বিওপি পর্যায়ে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় সকাল ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধানরা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং বিজিবি মহাপরিচালক শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এছাড়া দিবসটি পালন উপলক্ষে বিজিবির সব স্থাপনায় বিজিবির পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। বিজিবির সব সদস্যরা কালোব্যাজ ধারণ করবে। বিজিবির সব সেক্টর ও ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে বিশেষ দরবার অনুষ্ঠিত হবে।
বাদ জুমা পিলখানার বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদ, ঢাকা সেক্টর মসজিদ এবং বর্ডার গার্ড হাসপাতাল মসজিদে শহীদ ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রিত অতিথিরা, শহীদ ব্যক্তিদের নিকটাত্মীয়রা, পিলখানায় কর্মরত সব অফিসার, জুনিয়র কর্মকর্তা, অন্যান্য পদবির সৈনিক এবং বেসামরিক কর্মচারীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অংশ নেবেন।