বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেছেন, কোনো পণ্যের দাম বাড়লেই সরকারের সমালোচনা করা যাবে না।
আমাদের আমদানিনির্ভর বাজারে অনেককিছু বিবেচনা করে পণ্যের দাম নির্ধারণ করতে হয়। ভোক্তারা সব সময় দামে কম কিন্তু মানে ভালো পণ্য চায়।
তবে দুটো সবসময় একসঙ্গে হয় না। কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্যাবের) ভার্চুয়াল প্রতিনিধি সম্মেলন ও ডিজিটাল পোর্টাল ভোক্তাকণ্ঠ’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বুধবার তিনি এসব কথা বলেন।
ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমানের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান, নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ড. সহদেব চন্দ্র সাহা, ক্যাবের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অধ্যাপক এম শামসুল আলম, ভোক্তাকণ্ঠের সম্পাদক কাজী আব্দুল হান্নান প্রমুখ।
বাণিজ্য সচিব বলেন, শুধু বাজার সুবিধা থাকলে হবে না। যখন আমরা পণ্যের মান ঠিক রেখে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে বাজার পরিচালনা করতে যাই, তখন দাম বাড়তে পারে। এটা ভোক্তাদের বুঝতে হবে। একটা পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমাদের সবদিকে নজর রাখতে হয়। অনেক সময় পণ্য আসতে দীর্ঘসময় লাগে। এই সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে যায়। তখন চাইলেও হুট করে কমানো যায় না। এ জন্য দাম বাড়লেই অনেকে অনেক কথা বলেন। সরকারের সমালোচনা করেন। দাম বাড়লেই কিন্তু সরকারের সমালোচনা করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, ভোক্তা অধিকার শক্তিশালী করা একটি বিস্তৃত বিষয়। এর জন্য আইন আছে। অধিদপ্তর আছে। তারা নিয়ন্ত্রণমূলক কাজ করছে। একটা ঘটনা ঘটে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার রক্ষায় আমাদের আরও ব্যাপক কাজ করতে হবে। যদি আমাদের ব্যবসায়ীরা ভেজাল না দেন, মূল্য সঠিক রাখেন, তাহলে এসব অধিদপ্তরকে কাজ করতে হয় না।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, অনেকেই আমাদের প্রশ্ন করেন- আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছি কি না। আমরা স্বাধীনভাবেই কাজ করতে পারছি। ক্যাবসহ সবাই যেভাবে ভোক্তা অধিকারকে বারবার সামনে আনছেন, আমাদের কাজের ক্ষেত্রে আরও বেশি সুবিধা হচ্ছে। নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। এটা অব্যাহত থাকবে। ক্যাবকে কীভাবে শক্তিশালী করা যায়, সেদিকে আরও পরিকল্পনা করা দরকার। আমরা একসঙ্গে কাজ করলে ভোক্তাদের অধিকার আরও রক্ষা করতে পারব।
ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, আমাদের জাতীয়ভাবে মাথাপিছু আয় বাড়লেও করোনা-পরবর্তী নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির আয় কমেছে। তবে উচ্চবিত্তের বেড়েছে। বিষয়টির দিকে নজর দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। পৃথিবীর অনেক দেশেই জিডিপি কমেছে। বাংলাদেশে জিডিপির প্রবৃদ্ধি অব্যাহত আছে। কিন্তু এই প্রবৃদ্ধির ফল যেন সাধরণ মানুষ পায়। কারণ উচ্চবিত্তের প্রবৃদ্ধি বাড়বে আর সাধারণ মানুষ অল্পকিছু পাবে, তা সামঞ্জস্য নয়। সরকারকে এ ব্যাপারে সুনজর দিতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষের আয়ের জায়গা বাড়ে।