শৃঙ্খলার ব্যাপারে জাতীয় দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার কোনো ছাড় নেই। বিষয়টি হাড়ে হাড়ে টের পেলেন ফরোয়ার্ড নবীব নেওয়া জীবন। গতকাল নির্ধারিত সময়ে ক্যাম্পে আসেননি জীবন। আজ জাতীয় দলের ক্যাম্পে গেলে কোচ হ্যাভিয়ের তাকে বিনয়ের সঙ্গে স্যরি বলেছেন।
বসুন্ধরা কিংসের বাইরে অন্য দলের ২১ ফুটবলারের গতকাল বিকেলে হোটেল র্যাডিসনে রিপোর্টিং ছিল। গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল ইনজুরির জন্য রিপোর্ট করেননি। বাকি ১৯ জন সময় মতো রিপোর্ট করেছেন। সাত বছরের বেশি সময় জাতীয় দলে খেলা নবীব নেওয়াজ জীবন জানতেন-ই না গতকাল ছিল রিপোর্টিং।
জাতীয় দলের জন্য প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোতে চলছে ছুটি। সেই ছুটিতে জীবন বগুড়ায় গ্রামের বাড়ি গিয়েছেন। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে অনেকটা বিচ্ছিন্নতার মধ্যেই ছিলেন বলে জানালেন, ‘জাতীয় দলে ডাক পেয়েছি এটা জেনেছিলাম। ১৬ তারিখ বিকেলে যে রিপোর্টিং সেটা জানা ছিল না।’
জাতীয় দলে ডাক পাওয়া ফুটবলারদের ফেডারেশন থেকে ফোন, মেসেজ দেয়া হয় রিপোর্টিংয়ের জন্য। জীবনকেও ফেডারেশন থেকে ফোন করা হয়েছিল। মোবাইল বন্ধ থাকায় জীবন সেই বার্তা মিস করে গেছেন, ‘তীব্র গরমে আমাদের গ্রামে অনেক সময় বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে মোবাইল চার্জ না থাকায় বন্ধ ছিল অনেক সময়।’
জাতীয় দলের রিপোর্টিংয়ের সময়-স্থান দেশের সব শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকা, টিভি, অনলাইনে প্রচার হয়েছে। বাফুফে দল ঘোষণা করেছে শনিবার বিকেলে। এরপর ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও বিষয়টি জানতে না পারার কারণ সম্পর্কে এই ফরোয়ার্ড বলেন, ‘গ্রামে তেমন টিভি দেখা হয় না। মোবাইল চার্জ না থাকায় অনলাইনেও থাকতে পারিনি। ’
গতকাল বিকেলে ম্যানেজার ইকবাল হোসেনের কাছ থেকেই প্রথম রিপোর্টিংয়ের বিষয় জানতে পারেন। সেই রাতেই রওনা হতে চেয়েছিলেন। বাধ সাধে বৃষ্টি। এরপর সকালে রওনা হয়ে দুপুরে হোটেল র্যাডিসনে পৌঁছান জীবন। অবশ্য এর আগেই কোচিং স্টাফের মাধ্যমে হ্যাভিয়ের তাকে জানিয়েছিলেন তিনি ক্যাম্পে থাকতে পারবেন না। এরপরও জীবন সশরীরে কোচের সাক্ষাতের জন্য গিয়েছিলেন।
তাতেও কোচের মন গলাতে পারেননি এই ফরোয়ার্ড, ‘কোচ আমাকে খুব ভদ্র ব্যবহারে বলেছেন। আমার সঙ্গে তার কোনো দূরত্ব বা সমস্যা নেই। বিষয়টি শৃঙ্খলার। ফেডারেশন থেকে চিঠি দেয়া হবে আমাকে এর উত্তর দিতে বলেছেন কোচ।’
ক্লাব-জাতীয় দলে এত দিন খেলা জীবন কখনো এ রকম ঘটনার শিকার হননি। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে বেশ বিব্রত বোধ করছেন তিনি, ‘কারো প্রতি কোনো ক্ষোভ বা দোষ নেই। অনেক সময় কিছু ঘটনা কাকতালীয়ভাবে ঘটে যা আসলে নিয়ন্ত্রণে থাকে না।’
হোটেল র্যাডিসন থেকে সন্ধ্যায় বেরিয়ে আবার গ্রামের পথ ধরেছেন জীবন। ২০ মে বিকেলে ঢাকা আবাহনীর অনুশীলন শুরু। সেদিন সকালে আবার ঢাকায় আসবেন।
জাতীয় ফুটবল দল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গোলখরায় ভোগে। সিনিয়র ফরোয়ার্ড জীবনের অনুপস্থিতি সেই শঙ্কা আরো বাড়াল। জীবনের পরিবর্তে কোচ অন্য কোনো ফরোয়ার্ড ডাকবেন না এর মধ্যেই সমন্বয় করবেন সেটা এখনো কিছু বলেননি।
কৃতিত্বঃ ঢাকা পোস্ট