চিত্রনায়িকা নিপুণের কাছে চুমু চেয়েছিলেন শিল্পী সমিতি নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন। নিপুণ সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে বলেন, ওই সময় তাকে চড় দেয়া উচিত ছিল।
আজ রোববার বিকালে প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নিপুণ এ অভিযোগ করেন। বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন ভোটের দিন সকালে আমার কাছে ২টা চুমু চেয়েছিলেন। সেখানে আমাদের প্যানেলের জেসমিন ছিল। এসময় নিপুণ আরও বলেন, হারুনকে সিনেমা নাটকে কোনোদিনও না নেয়া উচিত।’
বাংলাদেশ শিল্পী সমিতির নির্বাচন পরবর্তী এ সংবাদ সম্মেলনে এসে নিপুণ দাবি করেন সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী জায়েদ খানের পদ স্থগিত করে পুনঃনির্বাচনের। সংবাদ সম্মেলনে প্রজেক্টরে নির্বাচনের দিন চিত্রনায়িকা মুনমুনের সাথে জায়েদ খানের অর্থ লেনদেনের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। এটিকে ভোট কেনার প্রমাণ হিসেবে দাবি করেন নিপুণ। বলেন, যে জায়গায় দাঁড়িয়ে ভোট কেনা হচ্ছিল ওই জায়গায় নির্বাচন কমিশন দাঁড়াতে নিষেধ করেছিল। সেখানে জায়েদ খানের মেক আপ ম্যানের ব্যাগে টাকা ছিল। জায়েদ খানের দুই পকেটেও টাকা ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে নিজেকে সাক্ষি বলে দাবি করেন অভিনয়শিল্পী জাদু আজাদ।
এছাড়াও প্রজেক্টরে জায়েদ খানের সাথে অজ্ঞাত এক পুলিশ কর্মকর্তার কথপোকথন পড়ে শোনান নিপুণ।
তাতে জায়েদ খান ভোট প্রদান কক্ষ থেকে রিয়াজকে সরানোর কথা বলতে দেখা যায়। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তা রিয়াজকে সরালে সমস্যা হবে জানিয়ে, অন্য পন্থা অবলম্বনের অনুরোধ জানান। এ ছাড়াও বেশ কিছু কথপোকথনে পুলিশের সাথে নির্বাচনের প্রভাব সৃষ্টিতে প্রশাসনের সাথে যোগসাজশের অভিযোগ আনেন নিপুণ।
তিনি জানান, সংবাদ সম্মেলনে আসার আগে বনানী থানায় নিজের জীবনের নিরপত্তাহীনতার জন্য একটি জিডি ও কথপোকথনগুলো পুলিশের আইজির কাছে অভিযোগ আকারে দিয়ে এসেছেন। নিপুন অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন, এফডিসির এমডি ওই পক্ষের হয়ে কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনে ১৮ সংগঠনকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এফডিসির এমডিকে বার বার বলা হয়েছে। অথচ তিনি বলেছেন তাকে জানানো হয়নি। আসলে জানানো হয়েছে। প্রশাসন বলেছে, পীরজাদা হারুন যদি বলেন ঢুকতে দেয়া হবে।
নিপুণ প্রশ্ন রাখেন, পীরজাদা হারুন সাহেব কেন আপনি এমনটা করেছেন? কি স্বার্থ ছিল আপনার? নিপুণ বলেন, ভোট কেনাবেচায় আমি আপনার কাছে দু’বার গিয়েছি। নিয়ম কানুন কি শুধু কাঞ্চন-নিপুণের প্যানেলের জন্য? জায়েদ খান যে টাকা দিচ্ছে, ভিডিওটাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। পীরজাদা এখন পর্যন্ত কেন পদক্ষেপ নিচ্ছে না? আসলে পীরজাদা হারুণ, এমডি এবং জায়েদ খান একটা গ্যাং। নির্বাচনে হারলেও নিপুণ থেমে থাকবেন না বলে জানান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এফডিসিতে এনে ‘জায়েদ চক্র’ ভাঙার জন্য লড়ে যাবেন বলে জানান। নিপুণ বলেন, আমি পুরো বাংলাদেশ থেকে যে ভোট এনেছি, তা জায়েদ চক্র কখনো করতে পারেনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি এফডিসিতে পা ফেলেন! এই চক্রকে না ভাঙলে চলচ্চিত্রের উন্নতি হবে না।
জায়েদ খানের উদ্দেশ্যে নিপুণ নির্বাচনের নানা নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ করে তার দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন কী আছে ওই চেয়ারে? নির্বাচনে নিপুণের প্যানেল থেকে সভাপতি পদে জয় লাভ করেছেন ইলিয়াস কাঞ্চনসহ দশজন প্রার্থী। তাই নিপুণ চান না পুরো নির্বাচন পুনরায় হোক। জায়েদ খানের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে তার পদটি স্থগিত করে এ পদে পুনরায় নির্বাচন করতে চান নিপুণ। তিনি বলেন, আমি জায়েদ খানের সাথে আবারও লড়তে চাই। এ জন্য প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে যাবেন বলেও জানান নিপুণ। সভায় চিত্রনায়ক রিয়াজ ও ইলিয়াস কাঞ্চন নিপুণের দাবির প্রতি সমর্থন দেন।