মোহাম্মদ মিলন আকতার, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে নিখোঁজের একদিন পর দুই শিশুসন্তানসহ গৃহবধূর মরদেহ হাত বাঁধা অবস্থায় নদী থেকে উদ্ধার হয়েছে। ওই নারীর ওরনার সঙ্গে শিশুদের বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় গৃহবধূর মা এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছেন। তবে গৃহবধূর স্বামী ও শ্বশুরের দাবি, এটি আত্মহত্যা।
আজ বুধবার সকালে সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের কাসুয়াডাঙ্গা তীরনই নদী থেকে মরদেহ তিনটি উদ্ধার হয়। গতকাল মঙ্গলবার থেকে তারা নিখোঁজ ছিলেন।
নিহতেরা হলেন—ওই গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী নাসিমা খাতুন (৩০) ও শিশু সন্তান শাওন (৮) সাফাত (৪)।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা বলছে, গতকাল মঙ্গলবার নাসিমা ও তাঁর দুই শিশুসন্তানসহ তীরনই নদীর ধারে ছাগল চড়াতে যায়। সেখানেই (নদীতে) তারা দুপুরের গোসল করেছেনও করেছেন। পরে সন্ধ্যা হলেও নাসিমাসহ তাঁর দুই সন্তান বাড়িতে না ফেরায় নাসিমার স্বামীসহ পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। অনেক রাত পর্যন্ত নদীর তীরবর্তী এলাকাসহ বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খোঁজ নেন তাঁরা।
আজ (বুধবার) সকালে নাসিমার শ্বশুর সামসুল হক তীরনই নদীর ধারে নাসিমাসহ তাঁর দুই শিশু সন্তানের মরদেহ নদীর বালুর মধ্যে আটকে থাকা অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। পরে স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় মরদেহ নদী এলাকা থেকে তুলে নেওয়া হয়। মরদেহ উদ্ধারে সময় নাসিমার ছিরা ওরনা দিয়ে দুই শিশু সন্তানের শরীর বাঁধা ছিল বলেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
নিহত নাসিমার মা খালেদা বেগমের দাবি, তাঁর জামাই (আব্দুর রহিম) একজন জুয়া খেলায় আসক্ত। জুয়ার টাকার জন্য তাঁর মেয়েকে প্রায় অত্যাচার, নির্যাতন করতেন তিনি।
এ বিষয়ে কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বকুল বলেন, ‘গতকাল থেকেই শিশুসহ ওই গৃহবধূ নিখোঁজ। রাতে অনেকবার নদীতে খোঁজাখুঁজি করা হয়েছে। বুধবার সকালে দুই শিশুসহ তাদের মায়ের লাশ নদী থেকে উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা।’
তিনি আরও বলেন, ‘মৃত্যুগুলো আসলে কীভাবে হলো তা সঠিকভাবে বলা মুশকিল। তবে ময়নাতদন্ত হলে মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন হবে।’
খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে পুলিশ সকাল সারে ১০টায় আসেন।
এবং এ বিষয়ে রাণীশংকৈল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মহসিন আলী বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। মরদেহ তিনটির প্রাথমিক সুরতহাল তৈরি করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।