বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাও-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ খুন হয়েছেন। নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মঙ্গলবার শহরের ম্যানহাটন এলাকার নিজ অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এখনও হত্যার রহস্য জানা যায়নি। তবে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অপরাধী শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে।
গত বছর ২.২ মিলিয়ন ডলার দিয়ে ম্যানহাটনের ডাউনটাউনে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন ফাহিম। নিউ ইয়র্ক পুলিশের কর্মকর্তা সার্জেন্ট কার্লোস নিভস জানান, ওই অ্যাপার্টমেন্ট থেকেই তার খণ্ডবিখণ্ড মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ‘ঘটনাস্থলে আমরা খণ্ড দেহ, বিচ্ছিন্ন করা মাথা ও হাত-পা পেয়েছি। সবকিছু এখনও সেখানে আছে।’ বলেন তিনি।
পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে ডেইলি নিউজ জানিয়েছে, ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন ফাহিম। দীর্ঘ সময় ভাইয়ের কোনও খোঁজ পাননি বলে মঙ্গলবার ৯১১ নম্বরে ফোন করেন তার বোন। এরপর পুলিশ এসে অ্যাপার্টমেন্টের ৭ম তলা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
মরদেহের পাশেই একটি ইলেকট্রিক করাত মেশিনের সন্ধান পায় পুলিশ। খণ্ডবিচ্ছিন্ন অঙ্গগুলো পাওয়া যায় পাশেই রাখা একটি প্লাস্টিক ব্যাগে। পুলিশের ধারণা, ওই করাত দিয়েই ফাহিমের দেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এটিকে ‘খুবই কুৎসিত’ হত্যাকাণ্ড বলে আখ্যায়িত করেছে তারা।
সূত্রকে উদ্ধৃত করে ডেইলি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাহিমের শেষ মুহূর্তগুলো একটা গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। সেখানে দেখা গেছে, সোমবার তিনি যখন লিফটে উঠছিলেন, তখন দ্বিতীয় একজন ব্যক্তি তাকে অনুসরণ করছিলেন। ওই ব্যক্তির পরনে ছিল স্যুট, হাতে গ্লাভস, মাথায় হ্যাট ও হাতে গ্লোবস। ফাহিম লিফট থেকে বের হয়ে তার ফ্লোরে নামতেই তাকে পড়ে যেতে দেখা যায়।
ওই ব্যক্তিকেই সম্ভাব্য খুনি হিসেবে ধারণা করছে পুলিশ। তারা বলছে, ‘অপরাধীর কাছে একটা স্যুটকেস ছিল। সে ছিল খুবই পেশাদার।’
ফাহিম সালেহর জন্ম ১৯৮৬ সালে। তার বাবা সালেহ উদ্দিন চট্টগ্রামের, আর মা নোয়াখালীর মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রের বেন্টলি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফরমেশন সিস্টেম পড়াশোনা করতেন ফাহিম। নাইজেরিয়া আর কলম্বিয়াতে তার দুটি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ কোম্পানি রয়েছে। পেশায় ওয়েবসাইট ডেভেলপার ফাহিম অ্যাডভেঞ্চার ক্যাপিটাল গ্লোবাল নামক একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানেরও উদ্যোক্তা ছিলেন।