তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে গত দু’দিনের টানা বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা। বাঁধে ভাঙন ধরায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভাসছে উপজেলার পৌরসভাসহ চারটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল। ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের চৈতন্যগঞ্জ এলাকায় ভাঙন ধরে। ভাঙন ধরেছে নদীর পাড়েও। এ ছাড়া ধলাই নদী রক্ষা বাঁধের আরও ১০টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি সহ কৃষকের স্বপ্ন। বিশেষ ক্ষতি হয়েছে সবজিচাষিদের। সার্বিকভাবে স্থানীয় কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার পৌরসভা এলাকার পানিসাইল, সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ, নারায়ণপুর, শমশেরনগরের রঘুনাথপুর, পতনঊষারের নোয়াগাঁও গ্রামসহ আদমপুর ও রহিমপুর ইউনিয়নের আরও কয়েকটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। গত পর্যন্ত বুধবার পাওয়া তথ্য বলছে, এখন এসব এলাকা থেকে ঢলের পানি নামেনি। প্রতিটি গ্রামের বিশাল এলাকাজুড়ে আউশ ক্ষেত ও সবজি বাগান রয়েছে পানির নিচে। এতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। মঙ্গলবার বিকেলে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের চৈতন্যগঞ্জ এলাকায় দেখা যায়, নদীতে ভাঙনের চাপ বাড়ছে। বাঁধের গুরুত্বপূর্ণ অংশে ভাঙন ধরায় আতঙ্ক বাড়ছে স্থানীয়দের মাঝে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভানুগাছ রেলওয়ে সেতু এলাকায় ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে পানির চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ভাঙন আতঙ্ক।এদিকে ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে পৌর এলাকায় নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ড্রেন দিয়ে উল্টো পানি ঢুকে যাচ্ছে পৌরসভা এলাকায়। এরই মধ্যে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পানিশালা এলাকার বসতবাড়ি, ডাকবাংলো, কমলগঞ্জ মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমি একেবারে তলিয়ে গেছে।পতনঊষারের কৃষক সামছুদ্দীন, আকতার মিয়া ও জলিল মিয়া জানান, ঢল ও বানের পানিতে তাদের আউশ ক্ষেতসহ সবজির বাগান পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব জমি থেকে ফসল পাওয়ার আশা নেই বললেই চলে।পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের সহকারী প্রকৌশলী সাকিব আহমেদ জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বাঁধ সংস্কারে দ্রুত কাজ শুরু করে হবে।
ইউএনও জয়নাল আবেদীন প্রতিবেদকে জানান, বাঁধের স্থানের ভাঙনের খবর পেয়েছেন। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। খুব দ্রুতই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অবহিত করা হয়েছে।