বিশ্বব্যাপী মহামারি রূপ নেয়া করোনাভাইরাসে প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। বাংলাদেশেও প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় রেকর্ড ভাঙছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ২ হাজার ৬৯৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল সংখ্যা ৫৫ হাজার ১৪০ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৭ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭৪৬ জনে।
দুই মাসের বেশি চলা সাধারণ ছুটির পর চতুর্থ কর্মদিবসে বুধবার (৩ জুন) দুপুরে করোনা ভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
এর আগে সাধারণ ছুটি শেষে রোববার (৩১ মে) প্রথম কর্মদিবসে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সাধারণ ছুটি শেষে অফিস খোলার তৃতীয় দিন মঙ্গলবার (২ জুন) আরও ২ হাজার ৯১১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হন। এছাড়া আরও ৩৭ জনের মৃত্যু হয়।
ডিসেম্বরে প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে বেশিরভাগ দেশই ভাইরাসটিতে তেমন পাত্তা দেয়নি। অনেক দেশই ধারণা করেছিল, এটি চীনা ভাইরাস এবং এর সংক্রমণ হয়তো ইউরোপ-আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়বে না। এজন্য সেখানকার দেশগুলো তেমন কোনো পদক্ষেপও নেয়নি। ফলও দিতে হচ্ছে তাদের। কারণ সংক্রমণ সংখ্যার দিক থেকে প্রথম দেশগুলোর তালিকার মাঝেই নেই চীন।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার। ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি। এ ছুটি আরেক দফা বাড়িয়ে ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়।
ছুটি শেষে করোনার বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেই ৩১ মে থেকে দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেয়া হয়। তবে বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এদিকে বুধবাবার (৩ জুন) সকাল ৯টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩ লাখ ৮২ হাজার ৪১২ জন। এছাড়া এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৬৪ লাখ ৮৫ হাজার ৫৭১ জনের শরীরে।
আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩০ লাখ ২৩ হাজার ৬৩৮ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৩০ লাখ ৭৯ হাজার ৫২১ জন। এদের মধ্যে ৩০ লাখ ২৪ হাজার ৯৯৩ জনের শরীরে মৃদু সংক্রমণ থাকলেও ৫৪ হাজার ৫২৮ জনের অবস্থা গুরুতর।