দেশের বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বিস্ময়কর বৃদ্ধিতে মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জান-মালের নিরাপত্তা নিয়ে সার্বক্ষণিক শঙ্কিত হওয়ার পাশাপাশি দেশের মানুষ শুধু ডাল-ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার অধিকারও ক্রমান্বয়ে হারাচ্ছে। ক্ষুধা ও অনাহার এখন দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের নিত্যসঙ্গী।’
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। এতে তিনি ‘দুঃশাসনের সর্বনাশা প্রতাপে বিরোধী দল ও মত এখন নিষ্ঠুর নিষ্পেষণে পিষ্ট বলেও অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গ্রাম থেকে শহরে বিএনপির কোনো নেতাকর্মীরই স্বাভাবিক জীবনযাপনে নিরাপত্তা নেই। সর্বত্রই মনে হয় পুলিশ বাহিনী বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে ধরার জন্য ওঁৎ পেতে আছে। বর্তমানে দুঃশাসনের প্রকোপ চরম মাত্রায় উপনীত হয়েছে।’
‘এই আওয়ামী সরকারের আমলে নারী, পুরুষ নির্বিশেষে স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার নিরাপত্তা চরমভাবে বিপন্ন। বেপরোয়া স্বৈরাচারের কবলে পড়ে দেশের মানুষ জান-মালের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক শঙ্কিত। বর্তমানে কাঁচা মরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামের বিস্ময়কর বৃদ্ধিতে মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘ক্ষমতাসীনদের প্রশ্রয়ে দেশব্যাপী সন্ত্রাসী আর বখাটেদের আধিপত্য কায়েম থাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙ্গে পড়েছে। পদে পদে মানুষের জীবন হয়ে পড়েছে বিপদাপন্ন। অপঘাতে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষ জীবন হারাচ্ছে।’
‘সড়কে মৃত্যুর হার প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। শাসকগোষ্ঠির মদদে এহেন অনাচার ও সহিংস তাণ্ডবের প্রতিবাদ করার জন্যই ঢাকা, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার ও কারাগারে প্রেরণ করা হচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যশোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সদস্য সচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু ও অন্যতম সদস্য মিজানুর রহমান খানসহ যুবদল, ছাত্রদলের ২১ জন নেতাকর্মীকে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় জড়িত করে জামিনের জন্য আদালতে হাজির হলে তাদেরকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো এবং ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ খালিদ হাসান জ্যাকি ও কলাবাগান থানা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাজিব হোসেনকে সকল মামলায় জামিনে থাকার পরেও পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার সরকারের অব্যাহত অত্যাচার, জুলুম ও নিপীড়নে স্বৈরাচারি নীতিরই বহিঃপ্রকাশ। তবে মিথ্যা মামলা আর গ্রেপ্তারের কৌশল অবলম্বন করে আটককৃত নেতৃবৃন্দকে নিষ্প্রান, নীরস ও নিস্তেজ করা যাবে না বরং তারা অগনতান্ত্রিক শক্তিকে আরো বেশি প্রতিরোধ করতে উদ্দীপ্ত হবে।’
অবিলম্বে যশোর ও ঢাকায় উল্লিখিত গ্রেপ্তার হওয়া নেতৃবৃন্দের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তির জোরালো আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজপথে জনগনের বিপুল স্রোত থামানো যাবে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবেই।’