বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘সরকার অত্যাচার ভয় দেখিয়ে বিরোধী দল ও মতকে বন্ধ করতে পারেন। কিন্তু আমেরিকা, জার্মান, ব্রিটেনের মুখ বন্ধ করবেন কিভাবে? তারা কি দেখে না! তারা সবই দেখছে। র্যাবের বিরুদ্ধে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা কি অযৌক্তিক? তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। বিএনপির ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, জনি, সুমনসহ অসংখ্য নেতাকর্মীদের কালো মাইক্রোবাস দিয়ে তুলে নিয়ে গেছেন। এগুলো কি আশেপাশের মানুষ দেখে না? দেশের মানুষকে রক্তচক্ষু দেখাতে পারেন, কিন্তু বিদেশীদের পারবেন না।’
সোমবার, জানুয়ারি ১৭,২০২২, দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সুস্থতা কামনা করে দোয়া ও আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, দেশবাসী আজ দুঃসময়ের মধ্যে দিন যাপন করছে। যারা গণতন্ত্র মুক্তির জন্য লড়াই করছে তারা কেউ ভালো নেই। আজ বিশ্ব মহামারির চেয়ে, দেশ জাতীয় মহামারিতে বেশি আক্রান্ত। পুরোদেশ আজ অত্যাচার অনাচারে আক্রান্ত। জাতি আজ ভীতিকর অবস্থায় রয়েছে। পাক হানাদারদের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে জাতি অস্ত্র হাতে দেশ স্বাধীন করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার পরই দেশের মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয় শাসকগোষ্ঠীর হাত। পরাধীন থাকাকালীন যেভাবে নিষ্পেষিত হয়েছিল জনগণ, বর্তমানেও তার চেয়ে বেশি নিষ্পেষিত দেশ। বর্তমান সরকার বিরোধী দল ও মতকে ধ্বংস করার জন্য যে অত্যাচার নিপীড়ন করছে তা ইয়াহিয়া ও টিক্কা খানকেও হার মানায়।
তিনি বলেন, বিরোধীদল আজ প্রতিবাদ করলে, কর্মসূচি দিলে গুম হতে হয়, বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়। রেহাই পায় না মিডিয়া কমীরাও। তাদেরকেও বন্দী করা হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে লাশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমিনের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘তিনি বললেন-আমেরিকায় প্রতিবছর ছয় লাখ লোক গুম হয়। আপনার তথ্য দেখলে মনে হয় আপনি প্রাইমারিও পাস করেননি। দুদিন পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবার বললেন আমেরিকায় প্রতি বছর এক লাখ মানুষ গুম হয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজের পদ টিকিয়ে রাখতে মন্ত্রীরা একের পর মিথ্যা বলে যাচ্ছে, ভিত্তিহীন তথ্য দিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। ক্ষমতার ক্ষুধার জন্য মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। মন্ত্রীদের দিয়ে মিথ্যা বলানো হচ্ছে। গোটা দেশ আজ বন্দীশালা। বর্তমান সরকারের তথাকথিত উন্নয়ন ফ্লাইওভার, সেতু দেখছে আর বন্দীশালায় ছটফট করছে। কখন কাকে গুম করবে সেই ভয়ে সবসময় শংকিত থাকে মানুষ। তথাকথিত উন্নয়নের কথা বলে মানুষকে ভুলানো যাবে না। এখন পিছু হটা সুযোগ নেই। পিছু হটলে জাতি শত বছর পিছিয়ে পড়বে। এই সরকার জমিদারি শাসন কায়েম করতে চায়। গণতন্ত্র মুক্তির জন্য, নির্ভয়ে বসবাসের জন্য এই সরকারের পতন ঘটাতেই হবে।
আসজাদুল আরিশ ডলের সভাপতিত্বে এসময় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিম আহমেদ নশু, কেন্দ্রীয় সদস্য হায়দার আলী লেলিন, শফিকুর রহমান মিঠু প্রমুখ।