নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রাম জেলার পুটিয়া থানার নূর হোসেন ২০০৭ সালে পরিবারের সুখের আশায় প্রবাসে পাড়ি জমান। পরিবারে স্ত্রী এবং তিন মেয়ে সন্তান রয়েছে।
২০১৫ সালের দিকে তার কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায়। চলে অনেক কষ্টের মধ্যে নূর হোসেনের জীবনযাত্রা। ছয় বছর ধরে আমিরাতের বৈধ ভিসা না থাকায় লুকিয়ে কাজ করতে হয় এই হতভাগা প্রবাসীকে। বিগত ছয় মাস পূর্বে হঠাৎ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স এসে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরিক্ষা-নীরিক্ষা করে গলায় ক্যান্সার ধরা পড়ে। গলাসহ শরীরে বেশ কয়েকটি জায়গায় অপারেশন হয়।
বর্তমানে তিনি একটু সুস্থ হলেও কথা বলতে পারেন না। শুধু পানি এবং জুস পান করেন। মাফরাক মেডিকেল থেকে সাড়ে পাঁচ মাস পরে সুস্থ হয়ে বাংলাদেশি কয়েকজনের সহায়তায় মুসাফাহ সাবিয়া খলিফা ১০ নম্বরে বিনা খরচে অবস্থান করেন।
দেশে যাওয়ার জন্য গত মাসের বাংলাদেশ বিমানের টিকিট ও ছিল নূর হোসেনের। পাসপোর্টে ভিসার মেয়াদ না থাকায় বিমানবন্দর থেকে তাকে ফিরতে হয়। এক পর্যায়ে ইমিগ্রেশন অফিসার নূর হোসেনকে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।
এক পর্যায়ে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএই’র সাংবাদিকের মাধ্যমে দূতাবাসের সহযোগিতা নেওয়া হয়। যার ফলে দূতাবাসের কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার নাজিম ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ফের কার্ড এবং বিমানের টিকেটের রি-ইস্যুসহ যাবতীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে দেন।
আনার্স কল্যাণ বোর্ড এর তহবিল থেকে অসুস্থ রোগের চিকিৎসার্থে বাংলাদেশ সরকার থেকে এক লক্ষ টাকার অনুদানসহ নানা সুবিধা নিতে পারবেন বলে জানায় বাংলাদেশ দূতাবাস।
তিনি দেশে গেলে ওই কার্ডের মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে চিকিৎসার জন্য ১ লক্ষ টাকা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আগামী কাল ১৪ ই জুন ২০২১ সকালে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট যোগে আবুধাবি থেকে ঢাকা এবং আভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার কথা রয়েছে।
দূতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) লুৎফুন নাহার নাজিম গণমাধ্যমকে জানান, “নূর হোসেনের দেশের যাওয়ার সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুতির ক্ষেত্রে দূতাবাস সহযোগিতা করেছে। প্রেসক্লাবের সদস্যরা নিয়মিত প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা আমাদেরকে জানান আমরা সেটার সমাধানে চেষ্টা করি। প্রবাসীদের জন্য দূতাবাস সব সময় খোলা। প্রবাসীদের সেবা প্রদানই আমাদের কাজ।”
এদিকে নূর হোসেন আমিরাতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর এবং দূতাবাসের সকল কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানান।