মৃত্যুপথযাত্রী মুসলিম কোভিড রোগীকে কালেমা তায়্যেবা পড়ে শোনানো ভারতের সেই নারী চিকিৎসক ডা. রেখা কৃষ্ণা প্রশংসায় ভাসছেন।
দুবাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গলফ নিউজ জানিয়েছে, ডা. রেখা কৃষ্ণা আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বড় হয়েছেন। সেখানেই শিশু বয়সে কালেমা তাইয়্যেবা শেখেন তিনি।
খবরে বলা হয়, গত ১৭ মে কেরালা রাজ্যের পালঘাট জেলার পতম্বিতে সিভানা হসপিটাল ও রিসার্চ সেন্টারে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ৫৭ বছর বয়সী এক মুসলিম নারী মারা যান। মৃত্যুর আগে তার চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন ডা. রেখা কৃষ্ণা।
রেখাসহ অন্যান্য চিকিৎসকও বুঝতে পারছিলেন, ওই নারীকে সুস্থ করে তোলা কার্যত অসম্ভব। রোগীর বাড়ির সদস্যদের সে কথা জানিয়েও দেন তারা।
ডা. রেখা শুক্রবার ভারত থেকে মোবাইল ফোনে গলফ নিউজকে বলেন, ৫৭ বছর বয়সি ওই রোগী কোভিডে আক্রান্ত হয়ে নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন। তিনি ১৭ দিনের জন্য ভেন্টিলেটরে ছিলেন। তার পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনদের আইসিইউতে ঢোকার অনুমতি ছিল না।
‘মৃত্যুর সময় আমি তার কষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম, কিন্তু একজন ডাক্তার হিসেবে আমি কিছুই করতে পারিনি।’
ডা. রেখা আরও বলেন, তাকে ভেন্টিলেটর থেকে নামানোর পর আমি কেবল ব্যথা কমাতে তার কাছে যাই এবং মুহূর্তের মধ্যে আমি কালেমা উচ্চারণ করেছিলাম— লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ {আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল}।
তিনি বলেন, এমনটা যে করব আগে থেকে ভাবিনি। মুহূর্তটা এমনই হৃদয়বিদারক ছিল, তাই আচমকা করে ফেলি। আমার বড় হয়ে ওঠা দুবাইতে। তাই ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে অল্প বিস্তর জানি। সে কারণেই মৃত্যুপথযাত্রী করোনা রোগীর কানে কলমা পড়ে শুনিয়েছিলাম। এটা কোনো ধর্মীয় আচার নয়, মানবিক পদক্ষেপ। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর রেখার মানবিক প্রশংসা করেছেন সবাই। গলফ নিউজ জানায়, রেখা সর্বশেষ গত মার্চে দুবাইয়ে তার দুই বাচ্চাকে নিয়ে ছুটিতে বেড়াতে গিয়েছিলেন।