স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়াসহ দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে দল থেকে বহিস্কৃত নেতাকর্মী সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।
গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে আগামী ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় দলের ২২তম জাতীয় কাউন্সিলের বাজেট অনুমোদন করা হয়। এ ছাড়া গত জাতীয় কাউন্সিলের পর থেকে তিন পঞ্জিকাবর্ষে দলের আয়-ব্যয়ের হিসাবও অনুমোদন হয়, যা বছরওয়ারি নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হয়েছিল। প্রায় আড়াই ঘণ্টার এ বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৮০ সদস্যের জাতীয় কমিটির বেশিরভাগই উপস্থিত ছিলেন। নেতাদের কয়েকজন বেশ খোলামেলা বক্তব্য দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সব সদস্যকে রাজনীতিকে সক্রিয় করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা। একই সঙ্গে নিজ নিজ এলাকায় দলের সাংগঠনিক তৎপরতার পাশাপাশি সমস্যা তুলে ধরে এগুলো সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, দলের মধ্যে যাঁরা স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন কিংবা দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে দল থেকে বহিস্কৃত হয়েছিলেন- তাঁদের অনেকেই দলে ফেরার আবেদন করেছেন। আবেদনকারী এমন শতাধিক নেতাকর্মীকে সাধারণ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। আগামীতেও যাঁরা আবেদন করবেন, যাচাই-বাছাই করে তাঁদেরও ক্ষমা করে দেওয়া হবে।
তবে গুরুতর অপরাধ বা নৈতিক স্খলনজনিত কাজে জড়িতদের ক্ষমা করার বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন। এবারের নির্বাচন দলের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জের হবে। সহজে জয়ী হওয়াও যাবে না। এ জন্য নির্বাচনে সব নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভোটযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এ কারণে আবেদন করা বহিস্কৃত নেতাকর্মীর বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়েছে।
তবে ভবিষ্যতে দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রেখে স্বচ্ছতার সঙ্গে সাংগঠনিক কাজকর্মে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
বৈঠক শেষে রাতে গণভবন চত্বরে ব্রিফিংয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, জাতীয় কমিটি দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী এবং কোন্দল সৃষ্টিকারী শতাধিক নেতার আবেদন গ্রহণ করে তাঁদের সাধারণ ক্ষমা করেছে।