প্রায় ১০ বছর ঝুলে থাকার পর অবশেষে শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগিরই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চূড়ান্ত খসড়া পাঠানো হবে। এই খসড়ায় নতুন করে তেমন কিছু যোগ করা হয়নি। আইনে থাকার প্রয়োজন নেই এমন দু’টি বিষয় খসড়া থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের ড্রেস কোড। আইনে ড্রেস কোডের উল্লেখ থাকবে না। তবে নীতিমালা বা পরিপত্রে ড্রেস কোড নির্ধারণ করা হবে পরে। এদিকে খসড়ায় কৌশলগতভাবে কোচিং সেন্টার থাকলেও নোট-গাইড বই থাকবে না বলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত ধারায় কোনও পরিবর্তন আনা হয়নি। ভাষাগত বিষয় ও সামান্য ভুলত্রুটি সংশোধন করে খসড়াটি চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘বৈঠকে আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশোধনসহ যত দ্রুত সম্ভব চূড়ান্ত করে মন্ত্রী মহোদয়ের মাধ্যমে গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানানো হবে।’
মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের বলেন, ‘খসড়াটি রবিবারের (৫ জুলাই) বৈঠকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। তেমন কোনও পরিবর্তন আনা হয়নি। আইনে না থাকলেও হয় এমন দু’টি বিষয় বাদ দেওয়া হয়েছে। ধারায় এগুলোর উল্লেখ থাকার প্রয়োজন নেই। নীতিমালা বা পরিপত্রের মাধ্যমে নির্দেশনা দেওয়া যায়। এর মধ্যে একটি শিক্ষার্থীদের ড্রেস কোড। ডেস কোড আইনে রাখা হয়নি। খসড়া অনুযায়ী নোট-গাইড নিষিদ্ধ রাখার ধারাটি আগের মতোই রয়েছে।’
ভার্চ্যুয়াল ওই বৈঠকে অংশ নেওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, তেমন কিছুই পরিবর্তন আনা হয়নি। শিগগিরই চূড়ান্ত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি একটি অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, শিক্ষা আইন চূড়ান্ত করে মন্ত্রিসভায় উত্থাপনের জন্য শিগগিরই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে। এর চার মাস পর শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয় রবিবার (৫ জুলাই) এক ভার্চুয়াল বৈঠকে।
বৈঠকে সূত্রে জানা গেছে, আইনের খসড়ায় কোচিং সেন্টার ও নোট গাইড সংশ্লিষ্ট ধারায় কোনও পরিবর্তন আনা হয়নি। আইনের খসড়ায় কৌশলগতভাবে কোচিং থাকলেও নোট-গাইড বই থাকবে না বলা হয়েছে। তবে শব্দগত পরিবর্তন করা হবে কিনা তা নিশ্চিত করা যায়নি।
কোচিং সেন্টার পরিচালনা সংক্রান্ত ধারায় সন্ধ্যার পর কোচিং সেন্টার পরিচালনা করা যাবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট টিউশনের মাধ্যমে পাঠদানের জন্য কোচিং সেন্টার পরিচালনা করা বা কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করা নিষিদ্ধ গণ্য হবে না।
সংশ্লিষ্ট ধারার শর্তে বলা হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলাকালীন সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত দিনে কোচিং সেন্টার পরিচালনা করা যাবে না। তা করা হলে ওই কোচিং সেন্টারের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল হবে। কোচিং সেন্টারে কোনও শিক্ষক তার নিজ প্রতিষ্ঠানের কোনও শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাতে পারবেন না।
রবিবারের (৫ জুলাই) বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ভার্চুয়াল এই বৈঠকে যুক্ত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হাসান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ গোলাম মো. ফারুকসহ সংশ্লিষ্টরা।