মোঃ রাসেল ইসলাম,যশোর জেলা প্রতিনিধি : যশোরের শার্শা উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামে ত্রান চাওয়াকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যানের সাথে থাকা ব্যক্তির আচরনে আকবর নামে একজন ভাজা বিক্রেতা হৃদযন্ত্র ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।শনিবার (৯ মে) সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী মোঃ আব্দুল খালেক জানান, রুদ্রপুর পশ্চিমপাড়া বৌ বাজারের ইফতারি বিক্রেতা আকবার আলীর দোকানের সামনে শার্শার কায়বা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ টিংকু তার গাড়ি রাখে। এসময় অসহায় আকবার আলী চেয়ারম্যানকে বলেন, ‘আমাদের কি ত্রাণ হবে না। আমরা এখনও কোন ত্রাণ পেলাম না’। এসময় পাশে থাকা আব্দুল খালেক আকবার আলীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ত্রাণ হবে কিভাবে যাদের জমি আছে ছাদের বাড়ি আছে তাদের ত্রাণ হবে। তোমার কি করে হবে ত্রাণ তোমারতো ছাদের বাড়ি নেই। ওই কথা বলার সাথে সাথে চেয়ারম্যানের গাড়িতে থাকা রহিম নামে একজন নেমে এসে তার উপর চড়াও হয়। তখন চেয়ারম্যান টিংকু দোকানদার আকবার আলীকে বলে আমাকে হ্যালো চেয়ারম্যানে ফোন করলে তো ত্রাণ পৌছে যায়। এসময় আকবার আলী বলে আমার কাছে কি মোবাইল আছে আমি কি মোবাইল চালাতে পারি। এসব কথা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান আকবার আলীর সাথে খারাপ আচরন করে চলে যাওয়ার ১০ মিনিট পরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ইফতারি বিক্রেতা আকবার আলীর শরীরে কোন রোগ নেই। সে চেয়ারম্যান এর দুর্ব্যবহার এর কারনে হৃদযন্ত্র ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়। আকবার আলী প্রায় ৩০ বছর যাবৎ শার্শার কায়বা ইউনিয়নের রুদ্রপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে থাকেন। আকবার আলীর স্ত্রী এলাকার মাঠে কাজ করে। আমাদের এলাকায় সবার আগে আকবার আলী ত্রাণ পাওয়ার উপযুক্ত। তাকে এ পর্যন্ত কোন ত্রাণ দেওয়া হয়নি। তার সাথে খারাপ আচারন করায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ টিংকুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একজন আওয়ামীলীগ দলীয় চেয়ারম্যান। ওই এলাকাটা হচ্ছে জামাত বিএনপির এলাকা। তার পরও এখন সব কিছু সমান এই দুযোর্গে। আমি গাড়ি থেকে নেমে আকবার আলীকে বললাম আপনার কি চাল লাগবে। যদি লাগে তাহলে আমাকে বলতেন আমি আপনার বাড়িতে পৌছে দিতাম। আমি তার সাথে কোন খারাপ আচরন করিনি। বরং আমি আমার গাড়িতে রাখা একটি ত্রাণের প্যাকেট তাকে দিতে যাই। কিন্তু আব্দুল খালেক নামের এক ব্যক্তি আকবর আলীকে উত্তেজিত করে ফেলে। তিনি একজন বয়স্ক লোক। তাছাড়া মাথায় ও মনে হয় সমস্যা আছে। সে ত্রাণের প্যাকেট গ্রহন করেনি। আমি এলাকার ইউপি সদস্য হবিবরকে বলি ওই লোক খুব দরিদ্র। ওকে আপনি দেখবেন এবং ওনার নাম ত্রানের তালিকায় দিবেন।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হবিবর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব তাকে কোন গালাগালি বা তার সাথে কোন খারাপ আচরন করেনি। বরং তিনি তাকে ত্রাণের প্যাকেট দিতে গেলে আব্দুল খালেকের প্ররোচনায় পড়ে সে ত্রাণ নেয়নি।
এ ব্যাপারে শার্শা থানার ওসি বদরুল আলম খান বলেন, আমার কাছে কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে।