প্রাথমিকের গণ্ডি না পেরনো শ্বশুর দেখে রোগী আর এসএসসি পাস জামাই দেন ওষুধ। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া ডেন্টাল প্রতিষ্ঠান খুলে রাজধানীতে রোগীর জীবন নিয়ে খেলছিলেন নূর হোসেন ও জাহিদুল ইসলাম। র্যাবের অভিযানে জারিজুরি ফাঁস হলেও সাজা হয়েছে মাত্র ২ বছর।
দাঁতের চিকিৎসার মতো জটিল কাজটি যিনি করছেন তার শিক্ষার দৌড় তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত। ওষুধের নামও লিখতে পারেন না তিনি। অন্য চিকিৎসকের নামে তৈরি প্রেসক্রিপশনে সই করে দেন। এক্সরের দরকার না হলেও পাঠানো হয় নিজেদের প্রতিষ্ঠানে। এভাবে গত মার্চ মাস থেকে ডেন্টাল ক্লিনিক খুলে প্রতারণা করছিলেন শ্বশুর নূর হোসেন ও তার মেয়ের স্বামী জাহিদুল ইসলাম। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে জালিয়াতিতে জড়িত নুর হোসেন। এর আগে একটি ক্লিনিকে সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। আর তার জামাই ছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাব রক্ষক।
প্রাথমিকের গণ্ডি না পেরনো নূর হোসেন বলেন, ‘আমি একটা হাসপাতালে সহকারী হিসেবে কাজ করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে এটা খুলেছি। পড়াশোনা ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত।’ ভুক্তভোগী জানান, দাঁতে ব্যথা নিয়ে এ প্রতিষ্ঠানে আসলে নুর হোসেন তার চিকিৎসা করেন। চিকিৎসার পর আরো বাড়ে জটিলতা। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি প্রতারণা করে আসছে। তারা বিভিন্ন চিকিৎসকের নামের প্যাডে নিজেরা স্বাক্ষর দিয়ে রোগীদের ভুল চিকিৎসা দিচ্ছিল। এমনকি তাদের প্যাডে লেখা পঞ্চগড় ডেন্টাল ক্লিনিক। আর বাইরে সাইনবোর্ডে লিখা ‘হোসাঈনী ডেন্টাল’।
ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, ‘ওনাদের কোনো সার্টিফিকেট নেই। সামান্য একটা ওষুধের নামও তারা পড়তে পারেন না। প্রতারণার প্রত্যেকটি ধাপ এখানে স্পষ্ট।’।নূর হোসেনকে ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও জাহিদুল ইসলামকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।