বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বর্তমান অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। ভোটাধিকার আদায়ে সারা দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। এবার আর সরকার রক্ষা পাবে না। অচিরেই সরকারের পতন হবে।
রোববার, মে ৭, ২০২৩, দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক ও প্রকৌশলী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
‘নির্বাচন কমিশন স্বাধীন, তারা শুধু রুটিন কাজ করবে, তাদের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব আয়নায় নিজের চেহারা দেখুন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে কীভাবে দিনের ভোট রাতে নেওয়া হয়েছে? বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসী তা দেখেছে। আপনাদের অধীনে আজ পর্যন্ত কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে সব নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে। জনগণ তাদের নিজের ভোট দিতে পারেনি। এবার আর জনগণ আপনাদের বিশ্বাস করে না। আপনারা জনগণের সঙ্গে বারবার যে প্রতারণা করেছেন তারা সে জবাব এবার দেবে।
দেশব্যাপী আবারও গ্রেপ্তার-নির্যাতন চলছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই গত বছরের ৭ ডিসেম্বর পুলিশ নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা করেছিল। ৪৭০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছিল। সে হামলা ছিল পরিকল্পিত। কারাগারে গিয়ে দেখি গোটা কারাগার বিএনপি নেতাকর্মীতে পরিপূর্ণ। কারও পায়ে স্যান্ডেল, কেউ কেউ লুঙ্গি পরা। এরা অতিসাধারণ বিএনপির নেতাকর্মী। তারা বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছিলেন। গোটা দেশটাই আজ কারাগার। আমরা ছোট কারাগার থেকে বৃহৎ কারাগারে প্রবেশ করেছি মাত্র।
রিজভী বলেন, আটক করে, নিপীড়ন করে জনগণকে আর দাবিয়ে রাখা যাবে না। গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করে গণজোয়ার ঠেকাতে পারবে না সরকার। এবার জনগণের বিজয় হবেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে গিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হয়েছে।
বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিকের ওপর হামলার ঘটনায় যুবদলের নেতাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে রিজভী বলেন, বিএনপি বা যুবদলের কোনো নেতাকর্মী তার ওপর হামলা করেনি। এ ঘটনা সাজানো ও মিথ্যা। বিএনপির তরুণ নেতৃত্বকে ধ্বংস করতে সাজানো মামলা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মানুষ জানে বিচারপতি মানিক একজন নিপীড়ক বিচারপতি ছিলেন। এখনো তিনি তদবির করছেন মিথ্যা সাজানো মামলায় যাতে কেউ জামিন না পান। তিনি বিচারপতিদের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন ন্যায়বিচার করেন এবং আটক নেতাকর্মীদের জামিন দেন। এ সময় সাইফুল আলম নিরব, গোলাম মাওলা শাহীন, এস এম জাহাঙ্গীর, রফিক হাওলাদারসহ আটক সব নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করেন।
এদিকে রিজভীর সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন প্রকৌশলীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা। রোববার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রিজভীকে প্রথমে এ্যাব নেতারা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পরে মতবিনিময় করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এ্যাবের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ, সিনিয়র সহসভাপতি প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান চুন্নু, সহসভাপতি প্রকৌশলী মো. মোস্তাফা-ই-জামান সেলিম, যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী শামীম রাব্বী সঞ্চয়, প্রকৌশলী তানবিরুল ইসলাম তমাল, প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন তালুকদার, প্রকৌশলী মোতাহার হোসেন, প্রকৌশলী আহসান রাসেল, প্রকৌশলী কামরুল হাসান খান প্রমুখ। এ সময় বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সপু, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, আসাদুল করিম শাহীন, শামীমুর রহমান শামীম, আমিনুল ইসলাম, তারিকুল আলম তেনজিং, মৎস্যজীবী দলের মো. আব্দুর রহিম প্রমুখ।