জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশগ্রহণ করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিবৃন্দ, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
এরআগে ফজলে রাব্বী মিয়ার মরদেহ সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে তার মরদেহ নিউইয়র্ক থেকে ইকে-৫৮২ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে মরদেহ সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে আনা হয়। এসময় ফজলে রাব্বি মিয়ার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধান বিচারপতিসহ অন্য বিচারপতিরা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সময় শুক্রবার (২২শে জুলাই) দিনগত রাত ২টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রে নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। দীর্ঘদিন ধরে দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন গাইবান্ধা-৫ আসনের এই সংসদ সদস্য।
ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৪৬ সালের ১৫ই এপ্রিল গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার গটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ফয়জার রহমান এবং মাতার নাম হামিদুন নেছা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ফজলে রাব্বী মিয়া মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তিনি ১১নং সেক্টরে যুদ্ধ করেন।
ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালে চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ১৯৯৬ সালে ১২ই জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হন।
২০০৮ সালে নবম, ২০১৪ সালে দশম ও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৮৯ সালে তিনি আইন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। পঞ্চম ও সপ্তম সংসদে তিনি বিরোধীদলীয় হুইপ ছিলেন।
নবম সংসদে ফজলে রাব্বী সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি, কার্য উপদেষ্টা কমিটি, কার্য প্রণালী বিধি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দশম সংসদে ডেপুটি স্পিকারের চেয়ারে বসেন ফজলে রাব্বী মিয়া। একাদশ সংসদেও টানা দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়াদে ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এসময় তিনি কার্য উপদেষ্টা কমিটি ও পিটিশন কমিটির সদস্য এবং লাইব্রেরি কমিটির সভাপতি ছিলেন।