হাসপাতাল কর্মীদের হাতে পুলিশের সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিমের হত্যা মামলায় জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আর এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানাতে ইনস্টিটিউটে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) সকালে ডা. মামুনের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে হাসপাতালের পরিচালক বিধান রঞ্জন রায় ও সিনিয়র চিকিৎসকদের অবরুদ্ধ করে রাখে তারা। বন্ধ হয়ে পড়েছে হাসপাতালটির জরুরি সেবা।
আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী চিকিৎসকরা বলছেন, এএসপি আনিসুল হত্যাকাণ্ডে যে প্রক্রিয়ায় ডা. মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অগ্রহণযোগ্য।
ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মঙ্গলবার হাসপাতাল সংলগ্ন বাসা থেকে আটক করে পুলিশ। তাকে আটকের খবর দিয়ে পুলিশের তেজগাঁও জোনের ডিসি হারুন অর রশীদ সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, আনিসুল করিম হত্যা মামলায় এফআইআরভুক্ত ১৫ জনের মধ্যে মোট ১২ জনকে এ পর্যন্ত আটক করা গেছে। এদের মধ্যে চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবারই ডা. মামুনকে আদালতে উপস্থাপন করা হলে তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। ডা. মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ- তিনি মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটে আসা রোগীদের ঢাকার আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে পাঠাতেন।
গত ৯ নভেম্বর মাইন্ড এইড হাসপাতালেই চিকিৎসা করতে গিয়ে মারা যান পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিম। পরে হাসপাতালের ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে তাতে দেখা যায় একদল ব্যক্তি আনিসুল করিম ওই হাসপাতালে যাওয়ার পর তাকে একটি রুমে নিয়ে মারধর করছেন। অভিযোগ ওঠে- মারধরের সময় পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুলের মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, ভিডিও ফুটেজে যারা আনিসুল করিমকে টেনে হিঁচড়ে ওই কামরাটিতে নিয়ে যায় তারা কেউই চিকিৎসক ছিলেন না। এদের মধ্যে চার জন ওয়ার্ড বয়, দুজন সমন্বয়কারী, আর কয়েকজন পরিচ্ছন্নকর্মী ছিল।
ঘটনায় সংশ্লিষ্টসহ মোট ১১ জনকে ১০ নভেম্বর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যাদের মধ্যে হাসপাতালটির পরিচালক ডা. নিয়াজ মোর্শেদও রয়েছেন। এদের ১০ জনকে আদালতে হাজির করার পর আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিমের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা ফয়েজ উদ্দিন বাদী হয়ে আদাবর থানায় হত্যা মামলা করেছিলেন।