টানা ৪০ দিন তাকবিরে উলার সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করায় গাজীপুরের কালীগঞ্জে ১৯ কিশোরকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০ জনকে পুরস্কার হিসেবে বাইসাইকেল ও ৯ জনকে গিফট বক্স প্রদান করা হয়।
শুক্রবার বাদ আসর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের ছৈলাদী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ চত্বরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কিশোরদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসী।
শিশু-কিশোরদের মোবাইলের কুফল ও অতিরিক্ত আসক্ততা থেকে নামাজে আগ্রহী ও মসজিদমুখী করতেই এ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা।
আয়োজকদের একজন স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারক শেখ জানান, চলতি বছরের ২১ মে থেকে এই নামাজ প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে ৩০ জুন শেষ হয়। যেখানে ছৈলাদী গ্রামের ৩৭ জন কিশোর-যুবক অংশ নেয়। টানা ৪০ দিন তাকবিরে উলার সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে এসে আদায় করতে সক্ষম হয় ১০ জন কিশোর। ৯ জন কিশোর ১৮৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে। ২০০ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারী কিশোরকে বাইসাইকেল ও ১৮৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারী ৯ জন কিশোরকে গিফট বক্স অনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হয়।
ছৈলাদী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সেক্রেটারি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুরশেদ কাজী জানান, তুরস্কের দেখাদেখি এমন প্রতিযোগিতার বিষয়ে ভাবনা হয় ছৈলাদী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির। গ্রামবাসীর উদ্যোগে ও মসজিদ কমিটির আয়োজনে কিশোরদের নামাজে উদ্বুদ্ধ করতে এই নামাজ প্রতিযোগিতার আয়োজন।
ছৈলাদী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মুফতী হাবীবুল্লাহ রফিক বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারীকে আল্লাহ নিজ হাতে পুরস্কৃত করবেন। তবে আমরা শিশু-কিশোর বয়স থেকে তাদের নামাজের প্রতি আগ্রহী ও মসজিদমুখী করতেই শুধুমাত্র উদ্যোগ নিয়ে আয়োজন করেছি। এই উদ্যোগ শুধু ছৈলাদী গ্রামের নয় আশ-পাশের গ্রাম, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা হয়ে সমগ্র দেশে প্রতিষ্ঠিত হোক। এতে কোমলমতি শিশু-কিশোর ও যুবকরা মোবাইলের ভুল ব্যবহার থেকে দূরে থাকবে। আর এভাবেই তাদের মেধা সমাজ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
বাইসাইকেল পুরস্কার পাওয়া কিশোর ছৈলাদী গ্রামের বাসিন্দা রাকিবুল, জিদান ও ফয়সাল জানায়, ৪০ দিন তাকবিরে উলার সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করার মাধ্যমে এখন মোটামুটি অভ্যস্থ হয়ে গেছি। শুধু পুরস্কার পাওয়ার আশায় নয়। মুসলমান হিসেবে আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেই হবে। জীবনের বাকি সময় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করতে সবার কাছে দোয়াও চায় কিশোররা।
এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসসাদিকজামান বলেন, সব ধর্মের মূল্যবোধই সৃষ্টির কল্যাণে নিবেদিত। তাই যে আয়োজনের মাধ্যমে ওই কিশোরদের ভালো কাজের দিকে উৎসাহিত করা হয়েছে তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।