বাসুদেব বিশ্বাস, বান্দরবান: দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো বান্দরবানেও গত কয়েকদিন ধরে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি এ জেলায় দেখা দিয়েছে পাহাড় ধসের শঙ্কা।
বৃষ্টির কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের শঙ্কা থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। এরই মধ্যে সোমবার (০১ জুলাই) দুপুরে রুমা-বান্দরবান সড়কের দলিয়ান পাড়া এবং খুমী পাড়ায় মাটি ধসে সড়কের ওপর জমে থাকায় এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বান্দরবান জেলা কার্যালয়ের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) বান্দরবানে ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে আর বর্ষণজনিত কারণে পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের শঙ্কা রয়েছে।
এদিকে প্রবল বৃষ্টি আর বন্যার শঙ্কায় বান্দরবান পার্বত্য জেলার সাতটি উপজেলায় ২১৪টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে প্রশাসন। সাধারণ জনগণকে এ মহূর্তে সতর্ক থাকার পাশাপাশি নিরাপদে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বান্দরবান পৌরসভার মেয়র মো. সামসুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিন ধরে বান্দরবানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের নিয়ে সভা করা হয়েছে এবং কাউন্সিলরদের নিজ নিজ এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যেতে বলার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পৌর এলাকার নয়টি ওয়ার্ডে আমরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচিত করে সেখানকার প্রধান শিক্ষকদের আশ্রয়কেন্দ্রে আসা সবাইকে রাখার নির্দেশনা দিয়েছি এবং তাদের জন্য খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা রেখেছি।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, প্রবল বৃষ্টিতে বান্দরবানে নদীর পানি বেড়েছে। আমরা পৌরসভা, জেলা তথ্য অফিস ও ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যেতে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছি। আশা করি, সবাই সচেতন থাকলে এ দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
অন্যদিকে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে বাড়ছে জনদুর্ভোগ। বৃষ্টির কারণে প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া লোকজন ঘর থেকে বাইরে যাচ্ছেন না।
বৃষ্টির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা বিরাজ করছে। মানুষ ঘর থেকে কম বের হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে অনেকটা ভাটা পড়েছে। এদিকে বৃষ্টিতে বান্দরবানের সাংগু আর মাতামহুরী নদীর পানি বেড়ে যাচ্ছে। এভাবে আর কয়েকদিন বৃষ্টি হলে নদী উপচে পানি বাড়িঘরে ঢুকতে পারে।