মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের পক্ষেই জয়ের হাওয়া। ম্যাজিক ফিগার ২৭০ ইলেক্টোরাল ভোটের কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী। এখন পর্যন্ত তার ভাগ্যে জুটেছে ২৫৩টি ইলেক্টোরাল ভোট। আর দুটি রাজ্যে জয় পেলেই, নিশ্চিত হোয়াইট হাউসের টিকিট। অবশ্য বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম বলছে অ্যারিজোনায় জয় তুলে এরইমধ্যে ২৬৪ ইলেক্টোরাল ভোট নিশ্চিত করেছেন তিনি।
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২১৪টি ইলেক্টোরাল ভোট। মেইল ইন ব্যালট ইস্যুতে ঘোর আপত্তি রিপাবলিকান পার্টির। ৪ রাজ্যে মামলাও করেছেন ট্রাম্পের আইনজীবীরা।
ডাকযোগে বিপুল সংখ্যক ভোট পড়ায়, যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি রাজ্যে এখনো চলছে গণনা। তবে, ঘোষিত প্রাথমিক ফলাফলে ডেমোক্র্যাটদের পালে জয়ের হাওয়া লেগেছে। হিসাব-নিকাশে রিপাবলিকানদের জয়ের সম্ভাবনা ফিকে হয়ে আসছে।
বিষয়টি আঁচ করতে পেরে কিনা প্রচারণায় বারবারই ভোট চ্যালেঞ্জের হুমকি দিয়ে এসেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রাথমিক ফলাফলে বাইডেনের অগ্রযাত্রা স্পষ্ট হতেই, ৪ রাজ্যে- পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া, মিশিগান, উইসকনসিনে মামলা করেছে রিপাবলিকান শিবির। যার দুটিতে আগেই জয় পেয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী।
প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা এরিক ট্রাম্প বলেছেন, পেনসিলভানিয়ায় জালিয়াতির মাধ্যমেই একমাত্র এ নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারে ডেমোক্র্যাটরা। সেখানকার, নালা-নর্দমায় ব্যালট পেয়েছি আমরা। এমনকি, পর্যবেক্ষকদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতেও বাধা দেয়া হয়েছে। দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধানও বিস্তর। এ কারণেই, ভোট পুনর্গণনার দাবি জানিয়ে মামলা।
প্রেসিডেন্টের আরেক উপদেষ্টা রুডি জুলিয়ানির অভিযোগ, শুধু ফিলাডেলফিয়াই নয় বরং গোটা দেশেই ভোটচুরি করেছে প্রতিপক্ষরা। জর্জিয়া, মিশিগান, উইসকনসিনেও ভোট চ্যালেঞ্জ করে, মামলা দিয়েছি আমরা। জালিয়াতি, ভোট পুনর্গণনা এবং ব্যালট সামলাতে ব্যর্থতার অভিযোগ আনা হয়েছে। মার্কিনীদের জন্যেই এ লড়াই। এ অপবাদ নিয়ে ঘোর আপত্তি মামলার মুখোমুখি হওয়া রাজ্যগুলোর। উল্টো হুমকি-ধামকির অভিযোগ এনেছেন গভর্নররা।
পেনসিলভানিয়ার গভর্নর টম উল্ফ বলেছেন, ভোট গণনা বন্ধে ট্রাম্পের মামলা করা গণতন্ত্রের মৌলিক নীতির পরিপন্থি তো বটেই; অন্যায়ও। নির্বাচনী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন করতে না দিয়ে ভয় দেখানো, হামলা বা হুমকি দেয়া গণতন্ত্রের অবমাননা। জনগণের ভোটাধিকার রক্ষায় ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করবো।
সময়ের সাথে সাথে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হচ্ছেন বাইডেন। বলেছেন, মার্কিনীদের ভালোবাসাই তার সবচেয়ে বড় পাওয়া। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়লাভের জন্য যে ২৭০ ইলেক্টোরাল ভোট পেতে হয়, সেটা এরইমধ্যে আমরা পেয়ে গেছি। কিন্তু, এখনই বিজয় ঘোষণা করতে চাই না। কারণ, পূর্ণাঙ্গ ফলাফলের জন্য প্রত্যেকটা ভোট গণণা হওয়া প্রয়োজন। কেননা ফল পাল্টে দেয়ার জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এদিকে, হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুম থেকে দেওয়া এক ভাষণে ট্রাম্প বলেন, আমরা এই নির্বাচনে জয়ী হয়েছি। এটা মার্কিন জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। তিনি ভোট গণনার অভিযোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ারও ঘোষণা দেন। মার্কিন সংবিধান অনুসারে, প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য ৫৩৮টি ইলেক্টোরালের মধ্যে ২৭০টি নিশ্চিত করতে হয়।