করোনার ঝুঁকি এড়াতে এবার ব্যাংকে সরাসরি গিয়ে বিল দেওয়ার বদলে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে গ্যাসের বিল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অনলাইন সেবায় দ্রুত গ্রাহকের সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করছে সব থেকে বড় গ্যাস বিতরণ কোম্পানি-তিতাস। রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় গ্যাস বিতরণ করে কোম্পানিটি। আগামী মাস থেকেই গ্রাহক পাবেন এই অনলাইন বিল পরিশোধ সেবা।
তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানি সূত্র বলছে, নগদ, বিকাশ ও রকেটে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে গ্রাহক যাতে বিল দিতে পারেন, এ জন্য খুব শিগগিরই চুক্তি করা হচ্ছে। এই সেবা আগামী মাস থেকেই চালু হয়ে যেতে পারে।
করোনার মধ্যে ব্যাংকে ভিড় বাড়বে—এই বিবেচনা করে জ্বালানি বিভাগের তরফ থেকে মে পর্যন্ত বিল না দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। তবে এতে আর্থিক সংকটে পড়ছে তিতাস। এখন ব্যাংকে বিল দিতে গেলে নিচ্ছেই না কিছু কিছু ব্যাংক। আর কিছু ব্যাংক বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখছে। কিছু সংখ্যক মানুষ বিল দিয়ে বের হলে, আবার কিছু সংখ্যককে বিল দিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।
গ্রাহকরা অভিযোগ করছেন, তাদের বিল দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা বিড়ম্বনার পাশাপাশি আতঙ্কেরও।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিদ্যুতের বিল অনলাইনে দেওয়া গেলেও এতদিন গ্যাসের বিল অনলাইনে দেওয়া যায়নি। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে মে পর্যন্ত গ্যাসের বিল না দেওয়ার ছাড় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, হঠাৎ করে জুন মাসের মধ্যে গ্যাসের বিল না দিলে লাইন কেটে দেওয়ার নির্দেশ দেয় জ্বালানি মন্ত্রণালয়। এতে একবারে তিন মাসের গ্যাসের বিল দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন গ্রাহকরা।
একদিনে একবারে অনেকগুলো টাকা, অন্যদিকে তিতাসের অনলাইনে বিল দেওয়ার সুযোগ না থাকায় বিপদে পড়েন গ্রাহকরা। তবে এই অসুবিধা থেকে বের হওয়ার ব্যবস্থা করেছে তিতাস। আগামী মাস থেকেই গ্রাহকরা গ্যাসের বিল অনলাইনে দিতে পারবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী মো. মামুন বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে আমরা তিন মাসের বিল ছাড় দিয়েছিলাম। এই তিন মাস বলতে গেলে বেশিরভাগ গ্রাহক বিল দেননি। আমরা কিছু বলিনি। কিন্তু তিতাসের তো চলতে হবে। আর্থিক বিষয় চিন্তা করে সবাইকে বিল দেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। এখন এক মাস যাওয়ার পর ব্যাংকগুলো খোলার পরও দেখা যাচ্ছে কেউ গ্যাসের বিল দিচ্ছেন না। এ অবস্থায় জ্বালানি বিভাগ থেকে লাইন কেটে দেওয়ার কথা বলেছেন প্রতিমন্ত্রী।’
তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে এই সিদ্ধান্ত দেওয়া হলেও আমরা এক-দুই মাস করে বিল দিলেও সে ক্ষেত্রে লাইন না কাটার কথা বিবেচনা করবো। ব্যাংকে গিয়ে বিল দেওয়ার ক্ষেত্রে করোনা ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে আমরা অনলাইনে বিল পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২৮ তারিখের বোর্ড মিটিংয়ে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আলী মো. মামুন বলেন, ‘আগামী মাস থেকেই গ্রাহকরা নগদ, রকেট ও বিকাশের মাধ্যমে গ্যাসের বিল দিতে পারবেন। এতে করোনা ঝুঁকি থেকে বেঁচে যাবেন গ্রাহকরা।’
উৎসঃ বাংলা ট্রিবিউন