ঈদুল ফিতরের ছুটিতে জাফলংয়ে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের বেধড়ক লাঠিপেটা করার ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৫ মে) বিকেল ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।
আটকদের মধ্যে দু’জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন—উপজেলার পন্নগ্রামের মৃত রাখাল চন্দ্র দাসের ছেলে লক্ষ্মণ চন্দ্র দাস (২১) ও একই উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে সেলিম আহমেদ (২০)।
সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনার মূল হোতা পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে দেখেছি, তারাই বেশি পিটিয়েছেন। এছাড়া আরও ৬/৭ জন জড়িত ছিলেন, তাদেরও আটকের চেষ্টা চলছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাফলং পর্যটন এলাকায় ঈদুল ফিতরের ছুটিতে জাফলংয়ে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের বেধড়ক লাঠিপেটা করেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা। এ সময় তারা নারী পর্যটকদেরও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ঈদের দিনগুলোতে টিকিট বিক্রি ও ছবি তোলার নামে স্বেচ্ছাসেবক নামধারী কতিপয় যুবক পর্যটকদের সঙ্গে চাঁদাবাজি করছিলেন। একটি ছবি তুলে তারা পর্যটকদের জিম্মি করে এক হাজার থেকে ১৫শ’ টাকা দাবি করেন।
এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের জের ধরে ওই পর্যটন এলাকায় স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করা কতিপয় যুবক পর্যটকদের ওপর বেপরোয়া হয়ে হামলা করেন। তারা বাঁশের লাঠি দিয়ে পর্যটকদের পেটাতে থাকেন। এ সময় তরুণীরা তাদের সঙ্গীদের বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাদেরও মারধর, হেনস্তা করা হয়। স্থানীয়রা ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করলেও কেউ এগিয়ে আসেননি।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাটি জানার পর আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটক করা হবে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান বলেন, পর্যটন এলাকায় টিকিট কাউন্টারে তর্কাতর্কির জের ধরে পর্যটকদের হামলার ঘটনাটি ঘটে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক, বর্বরোচিত। এটার রেশ পড়বে পুরো জাফলং পর্যটন কেন্দ্রের ওপর।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেছেন জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, হামলাকারী স্বেচ্ছাসেবকদের ইতোমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছি।
তিনি বলেন, জেলা পর্যটন উন্নয়ন কমিটি জাফংলয়ে ২৭ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিয়েছিল। পর্যটন এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য ১০ টাকা মূল্যের টিকিটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। টিকিট নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।