দেশের সব রাজনৈতিক দলকে আগামী সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আসন্ন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে অনুষ্ঠিত হবে… আমরা সব বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানাই। কারণ তাদের সবার জন্য সমতল ক্ষেত্র থাকবে।’
গতকাল শনিবার (১১ মার্চ) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ গ্রোথ স্টোরি : হোয়াটস দ্য ফিউচার রোড ম্যাপ’ শীর্ষক সেশনে সিএনএন অ্যাঙ্কর ও বিজনেস এডিটর এট লার্জ রিচার্ড কোয়েস্টের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অধিবেশনটি ছিল তিন দিনব্যাপী বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের একটি অংশ, যা শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। অধিবেশনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান সংক্রান্ত কোয়েস্টের প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ‘বর্তমান সরকার গত ১৪ বছরে এ ক্ষেত্রে চমৎকার কাজ করেছে। কারণ এই সময়ে এক হাজারের বেশি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভুয়া ভোটার তালিকা থাকলেও পরবর্তীতে ভোটার আইডি কার্ড চালু করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে স্বচ্ছভাবে গড়ে তোলার মতো নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করা হয়েছে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ‘সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের মতো একের পর এক ধারণা দিচ্ছে।’
সরকার আগামী দিনে চীনা ঋণের ফাঁদে পড়বে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নেতিবাচক জবাব দেন। তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষের মধ্যে একটা ধারণা আছে, বাংলাদেশ চীনের ঋণের ফাঁদে পড়বে। কিন্তু, এ ধরনের ফাঁদে পা দেওয়ার কোনো উপায় নেই।’
চীন বন্ধুপ্রতীম দেশ এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী বলে জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘আমরা বেশ ভালো অবস্থায় আছি। সুতরাং, চিন্তার কিছু নেই। বাংলাদেশ জাপানের কাছ থেকেও সহযোগিতা নিচ্ছে এবং এ নিয়ে কোনো কথা নেই।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র হলো—সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরীতা নয়। সরকার এই সময়ে জোট নিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ করছে। সরকার আঞ্চলিক অখণ্ডতা, মানবিক সহায়তা এবং যুদ্ধের অবসান সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলোকে সমর্থন করেছে।’
এ সংক্রান্ত আরেক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ‘অবশ্যই আমরা যুদ্ধের নিন্দা করি। আমরা শান্তিপ্রিয় দেশ। আমরা জাতিসংঘে এক নম্বর সৈন্য প্রেরণকারী দেশ। আমরা টেকসই শান্তি চাই এবং তাই প্রতিবেশীদের মধ্যে এই ধরনের দর্শনের প্রচার করছি…শান্তির সংস্কৃতি, প্রতিবেশীদের মধ্যে টেকসই শান্তি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ একদিন এক ভিন্ন দেশ হবে, এটি উৎপাদনের কেন্দ্রস্থলও হয়ে উঠবে। বাংলাদেশ এখন একটি গতিশীল অর্থনীতির দেশ এবং অনেক দেশ তাদের পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করে, যদিও স্বাধীনতার পর পরিস্থিতি এরকম ছিল না।’
জলবায়ু পরিবর্তন, মহামারি এবং যুদ্ধের প্রভাব এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তবে, আমরা জানি কীভাবে পরিচালনা করতে হয়। উন্নয়ন অংশীদারদের সহায়তায় আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’