মিনহাজ দিপু, খুলনা: ঘূর্ণিঝড় আইলা, সিডর, আম্ফানে বিধ্বস্ত উপকূলীয় কয়রা উপজেলা।খুলনা শহর থেকে শত কি.মি দূরে সুন্দরবনের কূলঘেষা উপজেলার অসহায় জনগনের দুঃখ দুর্দশা নিত্যদিনের সঙ্গী।জেলা শহর থেকে উপজেলা পর্যন্ত ভাল সড়ক না থাকায় ও উপজেলায় বসবাসের অনেক অসুবিধা থাকায় সরকারি কর্মকর্তারা প্রত্যন্ত এ জনপদে আসতে আগ্রহ দেখায় না।সুন্দরবন উপকূলের এই উপজেলার ভাগ্যহত লক্ষাধিক মানুষের আপদকালীন বিপদে সর্বদা সাহায্য করবে এমন একজন মানুষের আশায় পথ চেয়েছিলো এ অঞ্চলের মানুষ, ঠিক সে সময়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও ৩৩তম বিসিএস এর প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা মো.মমিনুর রহমান। যোগদানের পর থেকে জনসেবায় দিন-রাত ছুটছেন উপজেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত।
উপজেলায় নির্বাহী অফিসার হিসাবে যোগদান করার পর থেকে উপকূলীয় এই এলাকার সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য চেষ্টা অব্যহত রেখেছেন এবং যুব সমাজের অবক্ষয় রোধে মাদক ছেড়ে খেলার মাঠে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।তাঁর কাজের সুফল ভোগ করছে উপজেলাবাসী।তিনি কয়রায় যোগদানের পর থেকেই জনগনের সেবা করে উপজেলা বাসির মন জয় করেছেন।যোগদানের পর থেকেই বদলে গেছে উপজেলা অফিসের সকল কার্যক্রম ও সেবার মান। কাজে যোগদানের পর সেবা, সততা আর অদম্য কর্ম স্পৃহা দিয়ে জয় করে নিয়েছেন উপজেলাবাসির মন।
উপকূল এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনে বিরূপ বিষয় ও বৃক্ষরোপনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়তে তিনি বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করে শিক্ষার্থীদের সচেতন করে তুলেছেন।
উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন গুলোকে সক্রিয় করে এলাকায় বাল্যবিয়ে, যৌতুক, নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে মানুষ কে সচেতন করতে ভূমিকা রেখেছেন।যার ফলে উপজেলায় বাল্যবিয়ে ও যৌতুকের নির্যাতন কমে আসছে।স্কুল ও কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অনলাইন গেম আসক্তি থেকে খেলার মাঠে ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খেলার মাঠে ফিরিয়ে এনেছেন।এলাকার যুবকদের মাদক,সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচারণার মাধ্যমে সচেতন করেছেন।
উপজেলা পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, সর্বশ্রেণির মানুষ তাদের সমস্যার কথা সরাসরি ইউএনও’র কাছে বলতে পারছেন এবং ওই সকল মানুষের সমস্যার কথাশুনে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা গেছে।
উপজেলার গোবরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ডি,এম হেলাল উদ্দীন বলেন,কয়রা উপজেলার ইতিহাসে এমন জনবান্ধব ইউএনও আমরা আগে দেখিনি। উনি অল্প কয়েকদিনে যেভাবে সকলের ভালোবাসা ও দোয়া পেয়েছেন, এই দেশ একদিন উনার মতো ভালো লোকের কারণেই উন্নতির শিখরে আরোহন করবে।
কয়রা সদর ইউনিয়ন পরিষদের এস,এম বাহারুল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্ব পাওয়ার পর হতে ইউএনও তার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে সকলের মন জয় করে চলছেন। তিনি একের পর এক অতুলনীয় কাজ করে যাচ্ছেন যা দেখে মুগ্ধ না হওয়ার উপায় নেই। কয়রাবাসি তার এই সহযোগিতা আজীবন মনে রাখবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মমিনুর রহমান বলেন,
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ভিশন বাস্তবায়ন ও সুন্দরবনের উপকূলের জনপদ কয়রা কে আধুনিক উন্নত উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আমি উপজেলায় নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদানের পর থেকে সরকারি কাজের পাশাপাশি সময় করে যুবকদের নিয়ে কাজ করি।শিক্ষার্থীদের অনলাইন গেম ও খারাপ কাজ হতে বিরত রাখতে পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধুলা ও বিভিন্ন সামাজিক কাজে উদ্বুদ্ধ করেছি।