নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে, চীনা ব্যাংকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সচল অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ট্রাম্প ওই অ্যাকাউন্ট থাকার কথা স্বীকার করলেও তার আইনজীবী জানিয়েছেন, সেটি এখন আর ব্যবহার করা হয় না।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চীন অন্যায্য সুযোগ নিচ্ছে; এমন অভিযোগ তুলে প্রায় তিন বছর আগে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধের সূচনা করেন ট্রাম্প। ওয়াশিংটন-বেইজিং পরস্পরের বিরুদ্ধে আমদানিতে শুল্ক আরোপ করে। তবে নিউ ইয়র্ক টাইমস তাদের মঙ্গলবারের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তারা ট্রাম্পের আয়কর রেকর্ড হাতে পাওয়ার পর চীনে থাকা তার সচল ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কথা জানতে সক্ষম হয়েছে। আয়কর বিবরণীতে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত এবং কোম্পানির আর্থিক বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
এর আগে নিউ ইয়র্ক টাইমস-ই ট্রাম্পের আয়কর রেকর্ড ফাঁস করে দেয়। সেই রেকর্ড অনুযায়ী, দুই বছরে মাত্র ৭৫০ ডলার করে আয়কর দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। আর গত ১৫ বছরের মধ্যে ১০ বছর মোটেও কোনও আয়কর দেননি তিনি।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, চীনে ট্রাম্পের ওই ব্যাংক হিসাবটি নিয়ন্ত্রণ করে ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলস ম্যানেজমেন্ট। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে তারা স্থানীয় পর্যায়ে ওই ব্যাংক হিসাব দিয়ে আয়কর দিয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ট্রাম্পের এক মুখপাত্র দাবি করেন, এটি এশিয়ায় হোটেল ব্যবসায়ের সম্ভাব্য সুযোগ সন্ধানে ওই হিসাব খোলা হয়েছিল। সেখান থেকে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৫৬১ ডলার স্থানীয় কর দেওয়া হয়।
নিজে চীনে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালু রাখলেও আগামী ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন ও তার চীনা নীতির ঘোর সমালোচনা করছেন ট্রাম্প। এমনকি চীনে জো বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের ব্যবসা নিয়ে আঙুল তুলেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
ট্রাম্পের আয়কর রেকর্ডের সূত্রে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনে ব্যবসায়ের লক্ষ্যে ২০১২ সালে সাংহাইয়ে একটি অফিস খোলেন ট্রাম্প। দীর্ঘকালীন বিশেষ প্রকল্পের জন্য ৫টি ছোট কোম্পানিতে ট্রাম্প বিনিয়োগ করেন কমপক্ষে ১ লাখ ৯২ হাজার ডলার। এসব কোম্পানি ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৯৭ হাজার ৪০০ ডলার খরচ দেখিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আয়করের মতো ছোটখাটো খরচ এবং অ্যাকাউন্টিং ফি।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র ও বহির্বিশ্বে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নানা ধরনের ব্যবসায়িক স্বার্থ আছে। স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডে তার গলফ কোর্স রয়েছে, আরও রয়েছে পাঁচ তারকা বিলাসবহুল হোটেল চেইন।