বাংলা এক্সপ্রেস ডেস্কঃ কমতে শুরু করেছে সব ধরনের চালের দাম। নতুন চাল (বোরো ধান) বাজারে আসার কারণেই মূলত দামের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিকেজি চালে কমেছে সর্বোচ্চ ৬ টাকা।
এছাড়া বাজারে মনিটরিং জোরদার করায় ৭ দিনের ব্যবধানে আরও আটটি পণ্যের দাম কমেছে। পণ্যগুলো হচ্ছে- ছোলা, সয়াবিন তেল, পাম ওয়েল, চিনি, আদা, রসুন, পেঁয়াজ ও খেজুর। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে মসুর ডাল (বড় দানা) ৫ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ৩০ টাকা, জিরা ২০০ টাকা ও শুকনা মরিচ ৫০ টাকা বেড়েছে।
এছাড়া শসা, ধনে পাতা, লেবু ও পুদিনা পাতা ছাড়া সব ধরনের সবজির দাম গত সপ্তাহের মতো অপরিবর্তিত আছে। শুক্রবার রাজধানীর রায়সাহেব বাজার, মালিবাগ বাজার ও কেরানীগঞ্জের জিনজিরা কাঁচাবাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিন মালিবাগ বাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক মো. দিদার হোসেন যুগান্তরকে বলেন, প্রতিকেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৫৪-৫৫ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা। তবে নাজিরশাইল চাল গত সপ্তাহের মতো ৫৮-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া বিআর-২৮ চাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৪২ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৪৮ টাকা।
পাইজাম চাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা। যা ৭ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা। আর মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৯-৪০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা। তিনি বলেন, কৃষকের বোরো ধান মিল মালিকদের কাছে বিক্রি শুরু হয়েছে। যে কারণে মিল পর্যায় থেকে চালের দাম কমতে শুরু করেছে। যে কারণে পাইকারি ও খুচরা বাজারেও কমেছে।
এদিকে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দিন প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হয়েয়ে ৮৮-৯২ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৯২-৯৫ টাকা। প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা।
প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ৮৮ টাকা। যা ৭ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৯২ টাকা। প্রতি লিটার পাম ওয়েল (সুপার) বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা। প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছে ১৪০-১৬০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ১৮০-২০০ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৫ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪৫ টাকা কেজি। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকা। তবে বাজারে ৭ দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি জিরা ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকা। আর প্রতি কেজি শুকনা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৩০০-৩৫০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ২৫০-৩০০ টাকা।
জিনজিরা বাজারের মুদি বিক্রেতা মো. সাক্কুল আলম যুগান্তরকে বলেন, বাজারে মনিটরিং বাড়ায় পাইকাররা সিন্ডিকেট ভেঙে পণ্যের দাম কমিয়ে দিয়েছে। তাই সপ্তাহের ব্যবধানে ছোলা, সয়াবিন তেল, পাম ওয়েল, আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দাম কমেছে। মনে হচ্ছে সামনে আরও কমে যাবে। সব ধরনের মসলার দাম এখনও বাড়তি দরে স্থিতিশীল আছে।
তবে সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে প্রতিকেজি জিরায় ২০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। তাই খুচরাতেও ২০০ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৪০-১৬০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ১২০-১৩০ টাকা। দেশি মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৪৫০-৫০০ টাকা। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৬০০-৬৪০ টাকা। খাসির মাংস ৮০০-৯০০ টাকা।
বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যেসব সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে (গত সপ্তাহের তুলনায়) সেগুলো হচ্ছে- কেজি প্রতি বেগুন ৫০-৬০ টাকা, টমেটো ২৫-৩০ টাকা, করলা ৪০-৪৫ টাকা, পুদিনা পাতা ১০০ টাকা, গাজর ৩৫-৪০ টাকা ও পেঁপে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫ টাকা কমে শসা বিক্রি হয়েছে ৩০-৩৫ টাকা, ১৫-২০ টাকা কমে ধনে পাতা বিক্রি হয়েছে ৮০-৮৫ টাকায়। এছাড়া গত সপ্তাহে ৪০ টাকা হালি বিক্রি হওয়া লেবু এদিন বিক্রি হয়েছে ৩০-৩৫ টাকা।
রায়সাহেব বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. আল-আমিন বলেন, গত সপ্তাহের মতো একাধিক সবজির দাম অপরিবর্তিত আছে। তবে শসা, লেবু, ধনে পাতার দাম কমেছে। তবে সরবরাহ আগের তুলনায় অনেক বেশি। দু-এক দিনের মধ্যে সব ধরনের সবজির দাম আরও কমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
উৎসঃ দৈনিক যুগান্তর